ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার, যা প্রায় সকলের কাছেই প্রিয়। সকালের নাস্তা হোক কিংবা রাতের ঝটপট খাবার, ডিমের কদর সর্বত্র। শুধু তাই নয়, রূপচর্চায়ও ডিমের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। তবে অবাক করার মতো বিষয় হল, রূপচর্চা ও খাওয়া ছাড়াও ডিমের আরও বেশ কিছু ব্যবহার রয়েছে যা হয়তো অনেকেরই অজানা। জুতা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে গাছের সার হিসেবেও ডিম ব্যবহার করা যেতে পারে। চলুন, ডিমের সেইসব ব্যতিক্রমী ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
জুতা পরিষ্কারে:
পুরনো চামড়ার জুতার উপর অনেক সময় সাদাটে ঘোলা দাগ পড়ে যায়, এমনকি ছত্রাকও জন্মাতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি কাপড়ে ডিমের সাদা অংশ নিয়ে দাগের উপর ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন, দাগ উঠে যাবে।
আঠা হিসেবে:
বাড়িতে হঠাৎ আঠা ফুরিয়ে গেলে চিন্তার কিছু নেই। ময়দা, চিনি, ডিমের সাদা অংশ এবং সামান্য জল মিশিয়ে সহজেই তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে বিকল্প আঠা।
চুলের কন্ডিশনার:
শ্যাম্পু করার পর হঠাৎ যদি কন্ডিশনার শেষ হয়ে যায়, তবে ডিমের কুসুমের সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগান। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেললে কন্ডিশনারের অভাব পূরণ হবে এবং চুলও মসৃণ হবে।
গাছের খাদ্য হিসেবে:
ডিম সেদ্ধ করার পর সেই জল ফেলে না দিয়ে গাছের গোড়ায় দিন। এছাড়াও ডিমের খোসা গুঁড়ো করে গাছের গোড়ায় দিলে তা গাছের শরীরে ক্যালসিয়ামের যোগান বাড়াতে সাহায্য করে এবং গাছকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পতঙ্গের হাত থেকেও রক্ষা করে।
রক্ত বন্ধ করতে:
দুর্ঘটনাজনিত কারণে শরীরের কোনো অংশ কেটে গেলে অনেক সময় রক্ত সহজে বন্ধ হতে চায় না। এমন পরিস্থিতিতে সেদ্ধ ডিমের খোসা ও সাদা অংশের মাঝে থাকা পাতলা খোসাটি ছাড়িয়ে নিন এবং ক্ষতস্থানের উপর চেপে ধরুন। এটি রক্ত বন্ধ করতে সহায়ক।
গয়না পরিষ্কারে:
রুপার গয়না কিছুদিন পরলেই কালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডিম খুব সহজেই এই গয়নাগুলোকে পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে তুলতে পারে। এর জন্য প্রথমে ডিম খুব ভালোভাবে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং কুসুম আলাদা করে নিন। এরপর ডিমের কুসুম একটি ঢাকনাযুক্ত পাত্রে নিয়ে হাত দিয়ে গুঁড়ো করে নিন। পাত্রের তলায় হালকা পেপার টাওয়েল বিছিয়ে তার উপর রুপোর গয়নাগুলো রাখুন। পাত্রের মুখের চারপাশে ময়দার প্রলেপ লাগিয়ে বায়ুনিরুদ্ধ করে বন্ধ করে দিন। দুদিন পর গয়নাগুলো বের করে দেখুন, কালো দাগ একেবারে উধাও!
ডিমের এই বহুমুখী ব্যবহার সত্যিই অবাক করার মতো। তাই ডিমকে শুধু খাদ্য বা রূপচর্চার উপাদান হিসেবে না দেখে, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজেও ব্যবহার করে দেখুন, উপকার পাবেন।