বিশ্বের প্রায় ৬৫ মিলিয়ন মানুষ ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় আক্রান্ত। ধূমপান ও দূষণ এই সমস্যার প্রধান কারণ হলেও, সচেতন থাকলে এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে ফুসফুসকে সুস্থ রাখা সম্ভব। ফুসফুসের নিজস্ব মেরামত করার ক্ষমতা রয়েছে, আর সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে আপনাকে সাহায্য করবে কয়েকটি সহজ অভ্যাস।
ফুসফুস পরিষ্কার করার পানীয়:
ডিটক্স ওয়াটার পানের মাধ্যমে ২-৩ সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যেই আপনি ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারেন। মধু ও গরম জল, লেবুর শরবত, সবুজ চা, গাজরের রস, হলুদ ও আদার মিশ্রণ, কলা-পালং শাক ও বেরির মতো পানীয় আপনার শ্লেষ্মা কমাতে সহায়ক হবে।
লবণ থেরাপি:
লবণ থেরাপি, যা হ্যালোথেরাপি নামেও পরিচিত, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও কাশির মতো ফুসফুসের সমস্যার বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। লবণের খনি বা গুহা পরিদর্শনে গেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও, হিমালয়ান লবণের বাতি কিনে বাড়িতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওরিগানো তেল:
ওরিগানো তেল একটি প্রাকৃতিক ডিকনজেস্টেন্ট হিসেবে কাজ করে। সমপরিমাণ ওরিগানো তেল ও বাদাম তেল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। জিহ্বার নিচে মাত্র ১-২ ফোঁটা নিয়ে ৩-৫ মিনিট ধরে রাখুন, তারপর কুলি করে ফেলুন। টানা এক মাস দৈনিক ৩ বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে উপকার পাবেন।
স্টিম বাথ:
সপ্তাহে অন্তত ৩ বার গরম জলে স্নান করুন অথবা স্টিম বাথ নিন। খেয়াল রাখবেন তাপমাত্রা যেন ৯০ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে থাকে।
যা এড়িয়ে চলবেন:
মূলা ও ভেষজ খাবার ফুসফুস পরিষ্কার করতে সাহায্য করলেও, মসলাদার খাবার বাদ দিতে হবে। পনির, মাখন, দই, দুগ্ধজাত পণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের মতো কিছু খাবার ফুসফুসে শ্লেষ্মা বৃদ্ধি করে।
জিহ্বা পরিষ্কার করুন:
ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মুখের স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করার পাশাপাশি জিহ্বাও পরিষ্কার করা জরুরি, কারণ জিহ্বাতেই সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া জমে থাকে যা সহজেই দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে।
শ্বাসের ব্যায়াম:
প্রাকৃতিক উপায়ে ফুসফুস পরিষ্কার করতে কিছু শ্বাসের ব্যায়াম অপরিহার্য। এই ব্যায়ামগুলি ফুসফুসের বন্ধ কোষ খুলে দেয়, ফলে বায়ু চলাচল উন্নত হয়। এটি করার জন্য আপনার ঘাড় ও কাঁধের পেশি শিথিল করুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং মুখ বন্ধ রাখুন। খুব গভীর শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এরপর ঠোঁট গোল করে ৪ পর্যন্ত গণনা করে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এই কৌশলটি দিনে ৪-৫ বার অনুশীলন করুন।
এই সহজ নিয়মগুলি মেনে চললে ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় ভুগলেও আপনি একটি উন্নত জীবনযাপন করতে পারবেন। আপনার ফুসফুসের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।