স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার বিকল্প নেই। না হলে অকালে কঠিন সব রোগে ভুগতে পারেন। তবে ওজন কমাতে গিয়ে বর্তমানে সবাই নানা ধরনের ডায়েট অনুসরণ করেন।
বিশেষ করে ইন্টারনেটে ছড়ানো বিভিন্ন ওজন কমানোর টিপস অনুসরণ করে নিজের অজান্তেই শারীরিক সমস্যা ডেকে আনছেন অনেকেই। চিকিৎসকদের মতে, ওজন কমানো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। সাধারণত শরীরচর্চার সময় শরীরে অনেক চাপ পড়ে।
এক্ষেত্রে অনেকের মধ্যেই দুর্বলতা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত শরীরচর্চার পরামর্শ দেন না কোনো বিশেষজ্ঞরাই। আপনার শরীর যতটা সক্ষম ততটা করুন। তার বেশি নয়। জেনে নিননওজন কমাতে গিয়ে যেসব বিপদ ডেকে আনছেন-
দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা
দ্রুত ওজন কমাতে অনেকে অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতি বেছে নেন। যার মধ্যে আছে এক বেলা না খেয়ে থাকা, অনেকক্ষণ পরপর খাওয়া বা একদমই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেওয়া। এভাবে অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে খাওয়া দাওয়া করে মেদ কমাতে গিয়ে নিজেরই ক্ষতি করছেন অনেকেই। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে প্রাথমিক পর্যায়ে ওজন কমতে পারে। তবে এতে শারীরিক সমস্যাও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে শরীরের চর্বির বদলে পেশিও কমতে পারে। পুষ্টিবিদরাও এমনই মনে করেন।
অত্যাধিক প্রোটিন কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমাতে গিয়ে সবাই কমবেশি প্রোটিনের উপর ভরসা রাখেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরের জন্য ভালো ও পুষ্টিকরও। তবে অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে অন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। যেহেতু এই খাবারে ফাইবারের অভাব থাকে। তাই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রায়ই ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
চিকিৎসকের মতে, শরীরে সব ধরনের খনিজ ও ভিটামিন থাকা প্রয়োজন। ওজন কমাতে গিয়ে সবাই খুব কম পরিমাণে খান। এ কারণে শরীর প্রয়োজনমতো পুষ্টি ও ভিটামিন পায় না। ফলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে শুরু করে। এটি শরীরে বিভিন্ন সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ায়।
পিত্তথলিতে পাথর
যখন খুব কম পরিমাণে খাবার খাওয়া হয় ও পেট দীর্ঘক্ষণ খালি থাকে তখন অবশিষ্ট খাবার ও রস দীর্ঘ সময় ধরে পরিপাকতন্ত্রের মধ্যে থাকে। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো একত্রিত হয়ে একটি পাথর তৈরি করে। এই পাথরের গঠন অনেক জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে, যা পিত্তথলিতে চরম ব্যথা ও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। জানা যায়, পিত্তথলির গঠনে অনেক ব্যথা হয়।
চুল উঠতে পারে
ওজন কমাতে গিয়ে সবাই কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খান। আবার অনেকেই কার্বোহাইড্রেট একেবারেই বাদ দেন। তাই ডায়েট চলাকালীন কিছু পুষ্টি, খনিজ ও ভিটামিনের অভাবে চুল পড়তে পারে। চিকিৎসকের মতে, এ কারণে নিজের মতো ডায়েট চার্ট বানিয়ে তা অনুসরণ না করে বরং পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চলুন।
নিস্তেজ ত্বক
ওজন কমাতে গিয়ে ত্বকের ক্ষতি করছেন না তো? শরীর সব পুষ্টি সমানভাবে না পেলে ত্বক প্রভাবিত হতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিন ও খনিজের অভাব ব্রণ, নিস্তেজ ত্বক, ব্রেকআউটের কারণ হতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ত্বককে সুস্থ রাখে। তাই আপনি ওজন কমাতে চান, তাহলে খাদ্যতালিকায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন।