সামান্থা ও রাজের দ্বিতীয় বিয়ে কেন হলো ‘ভূতশুদ্ধি’ মতে? এই যোগিক বিবাহের নিয়ম কেন সাধারণ বিয়ের থেকে আলাদা?

অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু (Samantha Ruth Prabhu) পরিচালক রাজ নিদিমোরুর (Raj Nidimoru) সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তবে এই বিয়েতে কোনো ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জাঁকজমক ছিল না, ছিল না কোনো চিরাচরিত হিন্দু রীতি। কোয়েম্বাটুরের ইশা যোগ সেন্টারের লিঙ্গ ভৈরবীর মন্দিরে শান্ত পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে তাঁদের ভূতশুদ্ধি মতে বিবাহ (Bhuta Shuddhi Vivaha)।

এই বিশেষ যোগিক বিবাহ রীতি কেন বেছে নিলেন এই তারকা দম্পতি?

ভূতশুদ্ধি বিবাহ কী?

ইশা যোগ সেন্টারের প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী, ভূতশুদ্ধি বিবাহ একটি অত্যন্ত আধ্যাত্মিক আচার। এই রীতির মূল বিশ্বাস হলো—মানুষের শরীর এবং প্রকৃতিতে বিদ্যমান পাঁচটি উপাদান (পঞ্চভূত)—মাটি, জল, আগুন, বায়ু ও আকাশ—দম্পতির মধ্যে শুদ্ধ ও একত্রিত করা।

সংস্কৃত ভাষায় ‘ভূতশুদ্ধি’র আক্ষরিক অর্থ হলো ‘উপাদানের শুদ্ধিকরণ’। যোগবিজ্ঞানে বিশ্বাস করা হয়, যখন এই পাঁচটি উপাদানের শক্তি পরিশুদ্ধ ও একত্রিত হয়, তখন নবদম্পতির মধ্যে সামঞ্জস্য, শান্তি এবং একটি শক্তিশালী মানসিক সংযোগ তৈরি হয়। তাই এই রীতি সাধারণ বিবাহ-আচার-নিয়মের থেকে অনেক বেশি আধ্যাত্মিক ও গভীর।

লিঙ্গ ভৈরবীর আশীর্বাদ:

ইশা যোগ সেন্টারে তিন ধরনের বিশেষ বিবাহ করানো হয়—লিঙ্গ ভৈরবী বিবাহ, বিবাহ বৈভবা এবং ভূতশুদ্ধি বিবাহ। এর মধ্যে ভূতশুদ্ধি বিবাহকে সবচেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক বলে মনে করা হয় এবং এটি দেবী লিঙ্গ ভৈরবীর আশীর্বাদে সম্পন্ন হয়।

লিঙ্গ ভৈরবী হলেন শক্তির এক তেজস্বী ও করুণাময় রূপ। বিশ্বাস করা হয়, তিনি ভক্তদের মন ও শরীরে স্থিরতা ও শক্তি দান করেন।

কীভাবে হয় এই বিবাহ?

ভূতশুদ্ধি মতে বিয়েতে বেশ কয়েকটি বিশেষ পর্যায় রয়েছে:

১. পবিত্র অগ্নি ও মন্ত্র: নবদম্পতিকে প্রথমে পবিত্র অগ্নির সামনে বসানো হয় এবং পুরোহিতের সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণ করতে হয়। ২. পঞ্চভূতে নৈবেদ্য: পঞ্চভূতের উপাদান—মাটি, জল, আগুন, বাতাস ও আকাশ—শুদ্ধ করে নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। ৩. ভৈরবী লকেট: এই পর্যায়গুলি শেষ হলে দম্পতিকে দেবী লিঙ্গ ভৈরবীর আশীর্বাদ নেওয়া একটি বিশেষ লকেট পরানো হয়।

এই আচারগুলি সম্পন্ন হলেই বিয়ের মূল পর্ব শেষ হয়। এরপর বর কনেকে মঙ্গলসূত্র পরাতে পারেন।

ভূতশুদ্ধি বিবাহ যেকোনো জায়গায় করা গেলেও, একটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—বিয়ের সময় দেবী লিঙ্গ ভৈরবীর কোনো রূপ, ছবি বা মূর্তি অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। তাঁকে সাক্ষী রেখেই এই যোগিক বিবাহের আচার সম্পূর্ণ হয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy