২০১৬ সালের ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘দঙ্গল’ ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও, বিশেষ করে চীনে, ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। কুস্তিগীর মহাবীর সিং ফোগট এবং তার দুই কন্যার জীবননির্ভর এই ছবিটি বক্স অফিসে ঝড় তুললেও, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে ছবিটি কেন মুক্তি পায়নি, সেই রহস্য এবার ফাঁস করলেন স্বয়ং বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ আমির খান।
সম্প্রতি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘আপ কি আদালত’-এ হাজির হয়ে আমির খান এই অপ্রকাশিত কারণটি সামনে আনেন। তিনি জানান, “পাকিস্তানের সেন্সর বোর্ড থেকে তখন আমাদের জানানো হয়েছিল, সিনেমা থেকে যদি ভারতের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত বাদ দেওয়া হয়, তবেই কেবল ছবিটি সেখানে মুক্তি পাবে।”
‘জাতীয় পতাকা ও সঙ্গীত বাদ দেব না!’
‘দঙ্গল’ সিনেমায় গীতা ফোগাট যখন আন্তর্জাতিক কুস্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন, সেই চূড়ান্ত দৃশ্যে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়েছিল এবং জাতীয় পতাকা দেখানো হয়েছিল। ঠিক এই বিষয়টিই পাকিস্তানের সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এমন শর্ত মানতে একদমই রাজি ছিলেন না আমির খান। অনুষ্ঠানে স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, “আমি ওদের বলেছিলাম, আমাদের কোনো দরকার নেই পাকিস্তানে সিনেমা দেখানোর। ব্যবসার কথা একবারও ভাবিনি। জাতীয় পতাকা এবং সঙ্গীত বাদ দিয়ে আমি কোনো সিনেমা চালাতে রাজি নই। এই বিষয়ে দ্বিতীয়বার ভাবারও প্রয়োজন হয়নি।”
বাণিজ্যের ঊর্ধ্বে দেশের সম্মান: আমিরের দৃঢ় অবস্থান
আমির খানের এই মন্তব্যের পর তার স্পষ্ট অবস্থান আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। তার কাছে যে বাণিজ্যের চেয়ে দেশের সম্মান অনেক বেশি মূল্যবান, তা তিনি প্রমাণ করে দিলেন। একাধারে একজন সফল অভিনেতা এবং প্রযোজক হয়েও দেশের প্রতি তার এই দৃঢ় অবস্থান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, শিল্পের ক্ষেত্রেও জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে আপস করতে রাজি নন আমির। তার এই সিদ্ধান্ত শুধু আর্থিক ক্ষতির কথা না ভেবে দেশের প্রতি তার ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
