৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা বাংলা ফিচার ফিল্মের সম্মান জিতে নিয়েছে পরিচালক অর্জুন দত্তের ছবি ‘ডিপ ফ্রিজ’। ২০২৩ সালের এই চলচ্চিত্রটিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আবির চট্টোপাধ্যায় এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী। প্রচার এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অভাবে সাধারণ দর্শকদের কাছে ছবিটি ততটা পরিচিতি না পেলেও, এটি বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আর এবার জাতীয় স্তরে বাংলা সিনেমার সেরা পুরস্কার জিতে নতুন করে স্পটলাইটে এসেছে অর্জুনের এই সৃষ্টি।
সম্পর্ক, বিচ্ছেদ ও মানসিক টানাপোড়েনের গল্প
‘ডিপ ফ্রিজ’ ছবিটির বিষয়বস্তু বর্তমান সময়ের সম্পর্কের জটিলতার সঙ্গে গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক। ছবিটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বিচ্ছেদের পর তাদের মানসিক টানাপোড়েন এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে। আবির চট্টোপাধ্যায় ছবিতে স্বর্ণাভ চরিত্রে এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী মিলি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই সম্পর্কের জটিলতার মধ্যেই তাদের সন্তান তাতাইয়ের চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছে লক্ষ্য ভট্টাচার্য। আবির ও তনুশ্রী ছাড়াও এই ছবিতে দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, অনুরাধা মুখোপাধ্যায় এবং শোয়েব কবীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন।
‘নিজের মতো করেই বানিয়েছিলাম’: অর্জুন দত্ত
ছবিটির এই সাফল্যের পর পরিচালক অর্জুন দত্ত এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার অনুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই ছবি নিজের মতো করেই বানিয়েছিলাম। যখন বানিয়েছি, তেমন প্রচার পাইনি। ইন্ডাস্ট্রিতে হাতে গোনা কয়েকজনই সেই সুযোগ পান। আমি সেই দলে নেই। তবু নিজের মতো করেই করার চেষ্টা করেছিলাম।” তার এই উক্তি বাংলা সিনেমার স্বাধীন নির্মাতাদের সংগ্রামের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
চলচ্চিত্র উৎসব থেকে জাতীয় স্বীকৃতি
‘ডিপ ফ্রিজ’ ছবিটি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জাতীয় মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছে এবং নানা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। অবশেষে, এই জাতীয় স্বীকৃতি ছবিটির দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কবে দেখা যাবে ‘ডিপ ফ্রিজ’?
জাতীয় স্বীকৃতির পর স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই জানতে চাইছেন, সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে কবে মুক্তি পাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন দত্ত জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে হলে মুক্তির কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে খুব তাড়াতাড়িই সিনেমাটি দর্শকদের সামনে নিয়ে আসার ইচ্ছে রয়েছে।” সম্ভবত, কোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ছবিটি মুক্তি পেতে পারে।
চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘ডিপ ফ্রিজ’-এর এই জাতীয় স্বীকৃতি বাংলায় ভিন্ন ধারার কাজকে নতুন করে অক্সিজেন জোগাবে। অর্জুন দত্তের মতো যে সব পরিচালকরা কেবল ভালো গল্প বলার আনন্দেই সিনেমা তৈরি করেন, এবার তারা নতুন করে স্পটলাইটে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।