“আমার তো বছরের পর বছর কাজ নেই”-অনির্বাণের ‘কাজ নেই’ মন্তব্যে শ্রীলেখার জবাব

টলিউডের অন্দরে ফেডারেশন ও পরিচালকদের সংঘাতের জেরে কাজ হারানোর আতঙ্ক এখন তুঙ্গে। এর মধ্যেই ১৩ জন পরিচালক ইন্ডাস্ট্রিতে সুষ্ঠু কাজের পরিবেশের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আর এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তিনি জানান, “রঘু ডাকাত”-এর পর তাঁর হাতে আর কোনও কাজ নেই। এই খবরে যখন টলিপাড়ায় রীতিমতো শোরগোল, তখনই বোমা ফাটালেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। তিনি নাম না করে অনির্বাণকে কটাক্ষ করে জানালেন, “আমি তো বছরের পর বছর কাজ পাই না, কই কেউ তো কিছু বলে না!”

ইন্ডাস্ট্রিতে বরাবরই ঠোঁটকাটা হিসেবে পরিচিত শ্রীলেখা মিত্র। কোনো বিষয় তাঁর ভুল মনে হলে তিনি প্রতিবাদ জানাতে পিছপা হন না। এদিন শ্রীলেখা তাঁর ফেসবুক পেজে নাম না করে ওই অভিনেতা-পরিচালককে উদ্দেশ্য করে লেখেন, “কারোর তিন মাস কাজ নেই দেখে হা হুতাশ, লেখালেখি, আমার তো বেশ কিছু বছর। প্রথা মেনে না চলার কারণ, তবু আছি এবং ভালো আছি।” শুধু লিখে ক্ষান্ত হননি শ্রীলেখা। তিনি দুটি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেখানে আরও স্পষ্টভাবে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভিডিওতে শ্রীলেখা বলেন, “যারা কাজ জানেন, তাঁদের কাজ তো থাকা উচিত। কেন থাকবে না?” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, কোভিড মহামারীর সময়ে এবং তার পরেও অনেক শিল্পী বাজারে মাছ বিক্রি করেছেন বা চপ ভেজেছেন জীবিকা নির্বাহের জন্য। নাম না করে শ্রীলেখা ইঙ্গিতে বলেন, কিছু মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা এবং আরও অনেকে ফেডারেশনের মাথাদের চটিয়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ হয়তো সমঝোতা করে নিয়েছেন, কিন্তু যারা নিজেদের অবস্থানে দৃঢ় ছিলেন, তাদের হাতে কোনো কাজ নেই।

এরপর শ্রীলেখা নিজের ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে ফিরে আসেন। তাঁর কণ্ঠে ছিল এক তিক্ত হাসি। তিনি বলেন, “এই বছরের সাত মাসে পা দিলাম তো। আমি একটাও কোনও কাজ পাইনি।” যদিও হেসে এই কথাগুলো বলছিলেন, কিন্তু তাঁর ভেতরের কষ্ট ও হতাশা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। শ্রীলেখা আরও জানান, টলিউডে কাজ নেই। তাই তাঁর বাংলায় থাকারও বিশেষ ইচ্ছে নেই। মুম্বাইয়ে থাকা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ হওয়ায় সেখানেও থিতু হতে পারছেন না তিনি। শ্রীলেখা এরপর প্রশ্ন তোলেন, “একজন পুরুষের তিন মাস ধরে কাজ নেই বলে যখন এত হইচই, তখন যে নারী বছরের পর বছর কাজ পাচ্ছে না, তাকে এক প্রকার একঘরে করে রাখা হয়েছে, এ নিয়ে তো কেউ কিছু বলে না।” শ্রীলেখা যে এই কথাগুলো অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে কটাক্ষ করেই বলেছেন, তা বুঝতে টলিপাড়ার কারোরই অসুবিধা হয়নি।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই সংবাদমাধ্যমের সামনে অনির্বাণ ভট্টাচার্য খোলসা করেছিলেন যে, গত তিন মাস ধরে তাঁর কাছে কোনো কাজের অফার আসেনি। এমনকি, তাঁর দাবি ছিল যে, ‘রঘু ডাকাত’ই আপাতত তাঁর শেষ কাজ। অনির্বাণের এমন কথা শুনে টলিপাড়ার পাশাপাশি সিনেপ্রেমীরাও রীতিমতো হতবাক হয়েছিলেন। কারণ, বর্তমানে টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা-পরিচালকদের তালিকায় তাঁর নাম আসে। অনির্বাণের এই মন্তব্যই এবার শ্রীলেখার পুরোনো ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে দিল, যা টলিউডের অন্দরের ক্ষমতা ও সম্পর্কের জটিল সমীকরণকে আবারও প্রকাশ্যে নিয়ে এল। এই বিতর্ক যে আগামী দিনে আরও নতুন মোড় নেবে, তা বলাই বাহুল্য।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy