রোম যখন পুড়ছিল, রাজা নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন—ইতিহাসের এই কুখ্যাত উপমা টেনেই এবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে তীব্র আক্রমণ করলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পিরোজপুরের এক বীভৎস অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও পোস্ট করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দেশে যখন একের পর এক হিন্দুর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তখন কি প্রশাসন নির্বিকার হয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছে?
তসলিমার দাবি, পিরোজপুরের জমুরিতলা গ্রামে ‘হিন্দুবিদ্বেষী জিহাদিরা’ ভোররাতে সাহা বাড়ির ৫টি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। যখন মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখনই আগুন লাগানো হয় যাতে কেউ প্রাণ বাঁচাতে না পারে। তসলিমা ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছেন, “বাকি যত হিন্দু বাড়ি আছে দেশে, এভাবেই কি আগুনে পোড়াবে সব? ইউনূস কি তখন বাঁশি বাজাবেন?” তাঁর মতে, বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে চরম ব্যর্থ।
শুধু সাম্প্রদায়িক হিংসাই নয়, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এই লেখিকা। আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ করে এবং তাদের বাদ দিয়ে যে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, তাকে ‘প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তসলিমার মতে, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা যেভাবে একতরফা নির্বাচন করেছিলেন, বর্তমান সরকারও সেই একই পথ অনুসরণ করছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একটি বড় রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন কি আদৌ বৈধতা পাবে? আসলে হাসিনাবিরোধীরা হাসিনাকেই নিজেদের শিক্ষক বানিয়ে ফেলেছে।” তিনি সাফ জানান, বিএনপি, এনসিপি বা জামায়াতের মধ্যে কোনো আদর্শগত পার্থক্য নেই। আওয়ামী লিগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে যেদিন সব দলকে নিয়ে নির্বাচন হবে, কেবল সেদিনই তাকে ‘বৈধ নির্বাচন’ বলা সম্ভব।