বিজেপির আদি নেতাদের ফেরানোর লক্ষ্যেই আয়োজন করা হয়েছিল সভার। আর সেই মঞ্চ থেকেই ‘দলবদলু’ নিয়ে নিজের তত্ত্ব খাড়া করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন উপলক্ষে ন্যাশনাল লাইব্রেরির ওই সভায় শুভেন্দু সাফ জানান, অন্য দল থেকে বিজেপিতে আসাদের তিনটি গোত্রে ভাগ করা যায়। সেই তালিকায় নিজেকেও একটি বিশেষ শ্রেণিতে রাখলেন তিনি।
শুভেন্দুর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, প্রথম গোত্রটি হলো যারা ভোটের মুখে আসে, জিতে পালায় বা হেরে ফিরে যায়। দ্বিতীয় গোত্র যারা অন্য দলে কোণঠাসা হয়ে আশ্রয়ের খোঁজে বিজেপিতে আসে। আর তৃতীয় গোত্র হলো যারা কোনো লাভের আশা না করে সব পদ ছেড়ে আসে। শুভেন্দু সগর্বে দাবি করেন, “আমি এই তৃতীয় গোষ্ঠীতে পড়ি। ৫টি দপ্তর এবং ৩টি বড় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে অমিত শাহ ও দিলীপ ঘোষের আমন্ত্রণে আমি বিজেপিতে এসেছি।” এমনকি তিনি এও ঘোষণা করেন যে, দল চাইলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি লড়বেন না, কেবল প্রচারেই মনোনিবেশ করবেন।
তবে শুভেন্দুর এই ‘দলবদলু’ বয়ান নিয়ে মঞ্চেই পাল্টা মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। শুভেন্দুর পরই বক্তব্য রাখতে উঠে শমীক বলেন, “বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে লড়াই করছেন। উনি দফতর ছেড়ে এসেছেন, এগুলো সবই এখন অতীত। আমি অনুজপ্রতিম শুভেন্দুর কাছে আবেদন করব, ভবিষ্যতের কোনো সভায় যেন এসব না বলেন। কারণ, তিনি এখন বিজেপির সঙ্গেই পুরোপুরি সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছেন।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, শুভেন্দুর দলবদল নিয়ে বারবার তৃণমূলের কটাক্ষের জবাব দিতেই তিনি এদিন নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্ভবত চান না যে, বারংবার ‘অন্য দল থেকে আসা’র বিষয়টি জনসমক্ষে আসুক। এতে দলের আদি ও নব্য দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুভেন্দুর ‘ভোট না লড়া’র মন্তব্যও দলের অন্দরে নতুন করে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।