বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার ধারাবাহিকতায় যুক্ত হলো নতুন এক নাম— অমৃত মণ্ডল ওরফে সম্রাট। বুধবার রাতে রাজবাড়ির পাংশা এলাকায় এই হিন্দু যুবককে গণপিটুনিতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দীপু দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এই ঘটনায় নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এই মৃত্যু ঘিরে যখন সাম্প্রদায়িক আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে, তখনই আত্মপক্ষ সমর্থনে সাফাই দিল মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।
ইউনূস প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিবৃতি জারি করে দাবি করা হয়েছে, অমৃত মণ্ডলের মৃত্যু কোনো সাম্প্রদায়িক কারণে হয়নি। পুলিশের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সরকারের দাবি, অমৃত একজন ‘চিহ্নিত দুষ্কৃতী’ ছিলেন। তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণরোষের শিকার হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে হত্যা ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা ছিল এবং তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন।
তবে সরকারের এই বয়ান মানতে নারাজ নেটিজেন ও মানবাধিকার কর্মীদের একাংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠছে, বারবার কেন হিন্দু যুবকদেরই গণপিটুনির শিকার হতে হচ্ছে? আইনের শাসন থাকলে কেন পিটিয়ে মারা হবে? নেটিজেনদের অভিযোগ, ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা তলানিতে ঠেকেছে। সরকার এই ঘটনাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার’ বলে উড়িয়ে দিলেও আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে ঢাকার ওপর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, একটি নির্দিষ্ট মহল নিহতের ধর্মীয় পরিচয়কে হাতিয়ার করে সাম্প্রদায়িক রঙ লাগানোর চেষ্টা করছে, যা সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে। উল্লেখ্য, এর আগে দীপু দাসকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে মারার ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘও বাংলাদেশে মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। সেই আবহে অমৃত মণ্ডলের মৃত্যু এবং সরকারের এই ‘অপ্ররাধী’ তকমা দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা ইউনূস প্রশাসনের ওপর চাপের পারদ আরও বাড়িয়ে দিল।