অন্ধের মতো ‘স্মার্ট ওয়াচ’-এর তথ্য বিশ্বাস করা কতটা বিপজ্জনক? জানতে পড়ুন

ডিজিটাল দুনিয়ায় এখন অনেকের হাতেই রয়েছে স্মার্টওয়াচ। এই স্মার্টওয়ার্চে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে। হৃদস্পন্দনের মাত্রা থেকে রক্তচাপ, শারীরিক শ্রম, ক্যালোরি ক্ষয়; এমনকী রাতে কতখানি ঘুমোলেন সে তথ্যও আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছে স্মার্টওয়াচ। কিন্তু জানেন কি, যে তথ্য দেখে আপনি নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাচ্ছেন তা হয়ত পুরোপুরি সঠিক নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

একাধিক রিপোর্ট বলছে, বর্তমান সময়ে দেশে হুড়মুড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে স্মার্টওয়াচ। যা হাতে পরে অন্ধের মতো তার তথ্যকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে দেশবাসী। তবে এই ঘটনা মোটেই ভালো ইঙ্গিত নয়, বরং সময় বিশেষে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। চিকিৎসকদের দাবি, সাধারণ মানুষ মনে করেন বাজারে আকছার যে স্মার্টওয়াচ বিক্রি হচ্ছে, এর মাধ্যমে হৃদরোগের সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব। এটি হৃদরোগের আগাম বার্তা দিয়ে দেয়। কিন্তু তা একেবারেই ঠিক নয়। আপনার স্মার্টওয়াচ যদি ভালো সংস্থা কিংবা ইন্ডিয়ান রেগুলেটরি অথরিটি সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েসনের অনুমোদন প্রাপ্ত হয় সেক্ষেত্রেও এগুলো নির্ভুল নয়। ৩ শতাংশ ক্ষেত্রে এগুলো ভুল তথ্য দেয়। কিন্তু তাতে অবশ্য হৃদরোগ আটকানো যায় না। কারণ, এটি শুধুমাত্র হৃদস্পন্দনের তথ্য দেয় আর কিছু নয়।

পাশাপাশি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, ব্যবহারকারীর ক্যালোরি ক্ষয় সংক্রান্ত যে তথ্য স্মার্টওয়াচে দেখানো হয় তাতে ১৫ থেকে ২১ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি রয়েছে। ফলে যারা ওজন কমানোর জন্য এগুলো ব্যবহার করছেন ভুল তথ্যের জেরে তাদের শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একইসঙ্গে রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, কত ঘণ্টা ঘুম হয়েছে সে সংক্রান্ত যে তথ্য স্মার্ট ওয়াচ দেয় তাও পুরোপুরি নির্ভুল নয়। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ভুল তথ্য দেয় স্মার্টওয়াচগুলো।

ফলে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এগুলোকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা যায় না, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর মাধ্যমে ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে। কিন্তু কেউ যদি এটিকে ধ্রুব সত্য বলে মেনে নিয়ে ব্যবহার করা শুরু করেন তাহলে তা তার জন্য অত্যন্ত বিপদের। কারণ আপনি হয়ত আধুনিক ঘড়িতে দেখছেন আপনার স্বাস্থ্য ঠিক আছে। তবে বাস্তবে আপনার শরীর ঠিক নেই। আবার উল্টোটাও হতে পারে, ঘড়িতে দেখছেন আপনার স্বাস্থ্য ঠিক নেই, কিন্তু বাস্তবে আপনার শরীরে কোনো সমস্যা নেই। তাই নির্দিষ্ট বয়সের পর সবার উচিত চিকিৎসকদের নির্দেশ মেনে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy