গত পাঁচ দিন ধরে হন্যে হয়ে নিখোঁজ বাবা-মায়ের খোঁজ করছিলেন মেয়ে। প্রতিদিন থানায় গিয়ে নিরাশ হয়ে ফিরতে হতো তাঁকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তদন্তে নামতেই যে সত্য বেরিয়ে এল, তাতে শিউরে উঠছে গোটা দেশ। নিজের জন্মদাতা বাবা-মাকেই নৃশংসভাবে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে তাঁদেরই একমাত্র ছেলে!
তদন্তে মোড়: নিখোঁজ রহস্যের অন্তরালে গত ১৩ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশের থানায় বাবা শ্যাম বাহাদুর ও মা ববিতার নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন তাঁদের মেয়ে। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই দম্পতির ছেলে অম্বেশের গতিবিধি লক্ষ করে। জানা যায়, করোনা আবহ থেকেই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন ছিল অম্বেশের। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে এক হাড়হিম করা কাহিনী।
কলকাতায় বিয়ে ও পারিবারিক অশান্তি পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত অম্বেশ জানায়, সে কলকাতায় থাকাকালীন এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করে। কিন্তু হিন্দু পরিবারে এই ‘ধর্মের বেড়াজাল’ টপকানো বিয়ে মেনে নিতে পারেননি বাবা-মা। এ নিয়ে দিনের পর দিন পরিবারে তিক্ততা বাড়ছিল। গত ৮ই ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে অম্বেশের সঙ্গে তার বাবা-মায়ের চূড়ান্ত অশান্তি বাধে।
লোহার রড ও শ্বাসরোধ: চরম নৃশংসতা বচসা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছালে মেজাজ হারায় অম্বেশ। পুলিশ জানিয়েছে:
প্রথমে লোহার রড দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করে তাঁকে খুন করে সে।
এরপর নিজের বাবাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে।
প্রমাণ লোপাট করতে ঘাতক ছেলে দু’জনের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে।
কাটা অংশগুলো ৬টি সিমেন্টের ব্যাগে ভরে নিজের গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় নদীতে ফেলে দেয়।
গ্রেফতার অভিযুক্ত ছেলের বয়ানের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ অভিযুক্ত অম্বেশকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে নদীতে ফেলে দেওয়া দেহের দেহাংশগুলো। ধর্মের জের নাকি দীর্ঘদিনের সাংসারিক ক্লান্তি— কোন জিঘাংসা থেকে এমন কাণ্ড ঘটাল এই যুবক, তা খতিয়ে দেখছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।