আগস্ট মাসে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার ‘জরিমানা’ হিসেবে আমেরিকা ভারতের উপর ৫০% আমদানি শুল্ক আরোপ করেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত এই উচ্চ ট্যারিফ বস্ত্র, চামড়া, গয়না এবং সামুদ্রিক খাবার-সহ একাধিক শিল্পকে প্রভাবিত করেছিল। তবে, নভেম্বরের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ২০০ টিরও বেশি কৃষি ও কৃষিপণ্যের উপর আমদানি শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছেন, যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য আশার সঞ্চার করেছে।
যেসব পণ্যে ছাড় দেওয়া হয়েছে:
ট্রাম্প প্রশাসন যে পণ্যগুলির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার বা হ্রাস করেছেন, সেগুলির মধ্যে রয়েছে:
-
পানীয়: চা এবং কফি।
-
মসলা: হলুদ, আদা, দারুচিনি, এলাচ, কালো মরিচ, লবঙ্গ এবং জিরা।
-
বাদাম: কাজু এবং অন্যান্য ধরণের গাছের বাদাম।
-
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য: প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিভিন্ন মৌসুমী ফল, ফলের পাল্প এবং ফলের রস।
ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব:
ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন (FIEO) জানিয়েছে যে এই আমদানি শুল্ক ছাড়ের ফলে ভারতীয় রপ্তানি প্রায় ২.৫-৩ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানিতে লাভবান হতে পারে। এই পদক্ষেপকে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে চলমান বাণিজ্য চুক্তির আলোচনার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
তবে, বর্তমানে চিংড়ি, বাসমতি চাল, রত্ন ও গয়না এবং পোশাকের মতো প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলির উপর কোনও ছাড় নেই এবং এগুলি সম্পূর্ণ শুল্কের অধীনে থাকবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তালিকা থেকে তাজা এবং লেবুজাতীয় ফল ও কলা বাদ দেওয়ায় এই ছাড়ের সুবিধা কিছুটা সীমিত হতে পারে।
ট্রাম্প কেন সিদ্ধান্ত নিলেন?
ট্রাম্প প্রশাসন এই নির্বাচিত পণ্যগুলির উপর শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কারণ উচ্চ শুল্কের ফলে মার্কিন বাজারে অনেক পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গিয়েছিল।
-
এর ফলে সাধারণ মার্কিন নাগরিকদের জন্য খাদ্যদ্রব্য কিনতে আগের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছিল, যা জীবনধারণে কষ্ট সৃষ্টি করছিল।
-
ক্রয়ক্ষমতা বজায় রাখার প্রয়োজন এবং বাজারে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য এই আমদানি শুল্ক কমানোর ধারণা তৈরি হয়।
এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য সুসংবাদ নিয়ে এসেছে, যারা আমেরিকার মতো একটি বড় বাজারে আবারও তাদের পণ্য বিক্রির সুযোগ পাবেন।