বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা স্বচ্ছ করার উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন বিহারের মতো এ রাজ্যেও বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত বংশীহারি থানা এলাকায় দুজন অবৈধ ভোটারের নাম সামনে এসেছে, যা নিয়ে চরম রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, তারা বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও বংশীহারি থানার পুলিশ নীরব রয়েছে।
❌ সুকান্ত মজুমদারের বিস্ফোরক দাবি: ‘পুলিশ নির্বিকার’
বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তাঁর এক্স (আগের টুইটার) হ্যান্ডেলে এই অভিযোগ তুলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন।
তিনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন:
“দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত বংশীহারি থানায় দুইজন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে বারবার লিখিত অভিযোগ পত্র দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না! অভিযোগকারী ব্যক্তি যথেষ্ট প্রামাণ্য নথি এমনকি অভিযুক্তদের বাংলাদেশের সচিত্র পরিচয়পত্রও জমা দিয়েছেন। তবুও পুলিশ নির্বিকার!”
সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই রাজ্য পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরাই ভোটব্যাঙ্ক, তাই প্রশাসন নীরব।”
🤔 প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন
সুকান্ত মজুমদারের এই অভিযোগের জেরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় রাজনৈতিক তাপমাত্রা তুঙ্গে। স্থানীয় মানুষজনের একাংশের বক্তব্য, প্রশাসনের নীরবতা সত্যিই প্রশ্ন তুলছে। এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “যদি অভিযোগে সত্যতা থাকে, তাহলে তদন্ত হওয়া উচিত।”
অন্যদিকে, স্থানীয় শাসক দলের নেতারা পাল্টা দাবি করেছেন যে বিজেপি নির্বাচনের আগে “ভোটার আতঙ্ক” তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।
SIR প্রক্রিয়া ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা গেছে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় প্রতিটি জেলার ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য অবৈধ ভোটার বা মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া এবং যোগ্য নাগরিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা। নির্বাচন কমিশনও জানিয়েছে, এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে জেলা প্রশাসন তদন্ত করবে। তবে বংশীহারির এই নির্দিষ্ট ঘটনার বিষয়ে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এই ধরনের অভিযোগ রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদলে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।