উত্তরবঙ্গের বক্সা এবং জলদাপাড়ার জঙ্গলে বুনো হাতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকালয়ে হাতির হানার ঘটনাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বন অধিকারিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগে যেখানে এলাকায় এক-দু’টো হাতি ঢুকতে দেখা যেত, সেখানে এখন দল বেঁধে হাতি লোকালয়ে প্রবেশ করছে এবং প্রায় নিত্যদিন সন্ধ্যা নামতেই তাণ্ডব চালাচ্ছে।
বক্সা ও জলদাপাড়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা হাতির দলগুলির নজর এখন স্থানীয় গ্রামগুলির দিকে। তারা অনেক সময় জাতীয় সড়ক বন্ধ করে রাখে, যা পথচারী ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হাতির হানায় সবচেয়ে বেশি অতিষ্ঠ হয়েছেন বনদফতরের নিমতি রেঞ্জ কার্যালয় সংলগ্ন এলাকার গ্রামবাসীরা, বিশেষত আলিপুরদুয়ার জেলার উত্তর ও দক্ষিণ লতাবাড়ি গ্রামের মানুষ।
গ্রামবাসীদের ক্ষোভ ও বিক্ষোভ: গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সকাল-বিকেল নেই—যখন তখন গ্রামে ঢুকে পড়ছে একদল হাতি। তাদের তাণ্ডবে বাড়ি-ঘর থেকে শুরু করে পাকা ফসলের ক্ষেত লণ্ডভণ্ড হচ্ছে। হাতির হানায় ইতোমধ্যে কয়েকজন বাসিন্দা আহতও হয়েছেন। বনকর্মীদের বারবার জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সম্প্রতি বনদফতরের নিমতি রেঞ্জ কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। কয়েকশো গ্রামবাসী রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়ে এই উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবি জানান। গ্রামবাসীদের মূল অভিযোগ, হাতি হানা ঠেকাতে বনদফতর কোনো ফেন্সিং বা বেড়ার ব্যবস্থা করছে না।
বন দফতরের বক্তব্য: বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন এডিএফও (ADFO) নবজ্যোতি দে। তিনি গ্রামবাসীদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, “বনকর্মীরা নিয়মিত টহল দেন। কিন্তু হাতির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৭ সালে শেষ হাতি গণনা হয়েছিল। তখন সর্বনিম্ন হাতির সংখ্যা ছিল ৭৭৬-এর মতো। আবার গণনা করলে সংখ্যাটি আরও বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।”