স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ জেনেনিন এক্ষুনি

গর্ভাবস্থা প্রতিটি নারীর জীবনের এক অসাধারণ এবং বিশেষ সময়। এই সময়টি আনন্দ, উদ্বেগ ও শারীরিক পরিবর্তনের এক আশ্চর্য মিশ্রণ। যেহেতু আপনি এখন আর একা নন, আপনার অনাগত সন্তানের সাথে আপনার শারীরিক সংযোগ তৈরি হয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবে সন্তানকে পৃথিবীতে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) প্রতিটি মায়েরই স্বপ্ন থাকে। সঠিক যত্ন ও প্রস্তুতি থাকলে এটি বেশিরভাগ নারীর পক্ষেই সম্ভব।

গর্ভাবস্থায় ছোটখাটো জটিলতাগুলো স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে তেমন বাধা হয়ে দাঁড়ায় না, কিন্তু কিছু বড় জটিলতায় সি-সেকশন (অস্ত্রোপচার) অপরিহার্য হয়ে ওঠে। তবে স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

গর্ভাবস্থা ও প্রসব সম্পর্কে শিক্ষা নিন
প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গর্ভাবস্থা, জন্মপূর্ব প্রস্তুতি এবং জন্মদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। এই বিষয়ে বিভিন্ন জার্নাল বা বই পড়তে পারেন। আজকাল ইউটিউবেও এই সম্পর্কিত প্রচুর ভিডিও পাওয়া যায়, যা আপনাকে ধারণা দিতে সাহায্য করবে। মানসিক প্রস্তুতির জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, যোগা বা মেডিটেশনের মতো সহজ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিগুলো অনুশীলন করতে পারেন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন (বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে)
গর্ভাবস্থায় হবু মাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে বলা হলেও, কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম আপনাকে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রস্তুত করতে পারে। খুব ভারী ওজন তোলা থেকে বিরত থাকুন। তবে, আপনার পেলভিক পেশী এবং উরুকে শক্তিশালী করার জন্য কিছু ব্যায়াম অনুশীলন করতে পারেন। এগুলি প্রসব ব্যথা মোকাবিলায় সহায়ক হবে। শ্রোণী প্রসারিত করা এবং উরুর জন্য স্কোয়াট অনুশীলন করতে পারেন। মনে রাখবেন, একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানেই ব্যায়াম করুন, কারণ সামান্য ভুল আপনার শিশুর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।

স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলুন
গর্ভাবস্থায় মায়ের ভালো পুষ্টি অত্যন্ত জরুরি। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত খাওয়া না হয়। অতিরিক্ত ওজন বাড়লে স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা হ্রাস পেতে পারে। এমন খাবার খান যা পুষ্টি জোগায় এবং আসন্ন মাসগুলোর জন্য আপনাকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী করে তোলে।

চাপকে না বলুন
মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তা যাতে মাকে প্রভাবিত করতে না পারে, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখুন। প্যারেন্টিং সংক্রান্ত বই পড়ুন, অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ইতিবাচক ও সুখী মানুষদের আশেপাশে থাকুন। এটি আপনার মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করুন
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের সরবরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, প্রসবের সময় আপনাকে অনেকক্ষণ দম ধরে রাখতে হবে এবং গভীর শ্বাস নিতে হবে। তাই ডেলিভারিকালীন প্রস্তুতির জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম নিয়মিত অনুশীলন করুন।

নিয়মিত ম্যাসাজ করুন
গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে (শেষ তিন মাস) নিয়মিত ম্যাসাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাসাজ আপনাকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করবে। এটি জয়েন্টের ব্যথা এবং পেশীর টানও প্রশমিত করবে।

নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন
জল আপনার শরীরের জন্য অপরিহার্য, এবং গর্ভবতী মায়ের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রসবের সময় যে বাড়তি শক্তি প্রয়োজন, তা জোগাতে জল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জলের চাহিদা মেটাতে তাজা ফলের রসও পান করতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy