পায়েস বা সেমাইয়ের মতো মিষ্টি জাতীয় খাবারে কিশমিশ ছাড়া যেন ভাবাই যায় না। যেকোনো মিষ্টি খাবারের স্বাদ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কিশমিশের ব্যবহার অপরিহার্য। আঙ্গুর শুকিয়ে তৈরি হলেও কিশমিশে আঙ্গুরের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। এটি আয়রন, পটাসিয়াম, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানে ভরপুর।
নিয়মিত কিশমিশ খেলে হজমের সমস্যা দূর হয় এবং শরীরে রক্তাল্পতা রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, যা অ্যানিমিয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রয়েছে, যা রক্ত গঠনে অত্যন্ত কার্যকর। কিশমিশে উপস্থিত তামা (কপার) লাল রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। তবে, এতসব উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত কিশমিশ খাওয়ার বেশ কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো:
অ্যালার্জি: অনেকেরই কিশমিশ খেলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি আপনারও কিশমিশ খাওয়ার পর চুলকানি, র্যাশ বা অন্য কোনো অস্বস্তি হয়, তাহলে অবিলম্বে এটি খাওয়া বন্ধ করুন।
শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য সমস্যা: অতিরিক্ত কিশমিশ গ্রহণের ফলে কারো কারো শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও, ডায়রিয়া, বমি এবং জ্বরের মতো উপসর্গও দেখা যেতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি: কিশমিশে ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই যাদের ওজন বেশি এবং যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কিশমিশ খাওয়া উচিত নয়। এটি খেলে ওজন বাড়তে পারে।
গ্যাসের সমস্যা: বেশি পরিমাণে কিশমিশ খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাসের সমস্যাও হতে পারে, যা অস্বস্তিকর।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি: যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের কিশমিশ কম পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ: বেশি কিশমিশ খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যায়, যা ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত ওজন আবার অনেক রোগের কারণ হতে পারে।
উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডস: কিশমিশে উচ্চ মাত্রার ট্রাইগ্লিসারাইডস থাকে, যা হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভার, লিভার ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে।
সুতরাং, কিশমিশ নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টিকর খাবার, তবে এর উপকারিতা পেতে হলে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। অতিরিক্ত কিশমিশ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।