আজকাল অনেকেই টয়লেটে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ মনে হলেও, এই অভ্যাস আসলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। টয়লেটের কাজ যত দ্রুত সেরে বেরিয়ে আসার কথা, হাতে ফোন থাকলে তা অনেক বেশি সময় নিয়ে নেয়। এই আপাত সাধারণ অভ্যাসটি কীভাবে আপনার অজান্তেই কঠিন সব রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, চলুন জেনে নিই:
১. ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাকের বিপজ্জনক সংক্রমণ:
টয়লেট হলো নানা ধরনের জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের প্রজননস্থল। সালমোনেলাসহ অসংখ্য ক্ষতিকারক জীবাণু টয়লেটের আর্দ্র ও উষ্ণ পরিবেশে দ্রুত বংশবিস্তার করে। আপনি যখন ফোন নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করেন, তখন এই অতিসক্রিয় জীবাণুগুলি সহজেই আপনার ফোনের পৃষ্ঠে স্থানান্তরিত হয় এবং সেখানেও নিজেদের বংশবিস্তার শুরু করে। এরপর সেই দূষিত ফোন ব্যবহার করলে আপনার শরীরে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। সাধারণ ফ্লু থেকে শুরু করে গুরুতর পেটের অসুখ পর্যন্ত হতে পারে।
২. ঘাড় ও শিরদাঁড়ার নীরব ক্ষতি:
টয়লেটে ফোন নিয়ে যাচ্ছেন মানেই আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ ফোনের স্ক্রিনে নিবদ্ধ। ঘাড় ঝুঁকিয়ে দীর্ঘক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার এই অভ্যাস ঘাড় এবং শিরদাঁড়ার উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে ঘাড় ব্যথা, স্পন্ডাইলোসিস, এমনকি শিরদাঁড়ার দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আধুনিক জীবনে এমনিতেই স্ক্রিন টাইম বেশি, তার উপর টয়লেটের বাড়তি সময় এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
৩. হজমতন্ত্রের গোলমাল: ডায়রিয়া ও বমির আশঙ্কা:
টয়লেটে ফোন ব্যবহারের অভ্যাস শরীরের স্বাভাবিক আভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপে ব্যাঘাত ঘটায়। এটি হজমতন্ত্রের প্রাকৃতিক ছন্দকে ব্যাহত করে। এর ফলে পেটে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে, যেমন – পেট খারাপ, ডায়রিয়া এবং বমির মতো উপসর্গ। দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকার কারণে শরীরের নিম্নাংশে রক্ত সঞ্চালনেও প্রভাব পড়তে পারে, যা পাইলসের মতো সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই অভ্যাসটি কেবল সময়ের অপচয়ই করে না, বরং আপনার স্বাস্থ্যকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। তাই সুস্থ থাকতে এবং সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে আজই টয়লেটে ফোন ব্যবহার করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
