রাজ্যের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী সংস্থা, বিধানসভায় ঘটল এক নজিরবিহীন ঘটনা। মঙ্গলবার অধিবেশন চলাকালীন হঠাতই বিকল হয়ে যায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যার জেরে চরম অস্বস্তিতে পড়েন বিধায়করা। তীব্র গরমে ঘর্মাক্ত হয়ে অনেককেই কাগজ দিয়ে বাতাস করতে দেখা যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত বিধানসভা কক্ষের সমস্ত দরজা খুলে দিয়ে অধিবেশন চালাতে হয়, যা এক নতুন অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছে।
অপ্রত্যাশিত বিভ্রাট: এসি বন্ধ, দরজা খোলা, শুভেন্দুর প্রশ্ন
মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৩২ মিনিটে প্রথমবার এসি বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে মেরামত করে কিছুক্ষণ চালু হলেও, তা আবারও বিকল হয়ে পড়ে। এই অপ্রত্যাশিত বিভ্রাটের জেরে অধিবেশন কক্ষে একে একে পনেরোটি দরজাই খুলে দিতে হয় বাতাস চলাচলের জন্য।
ঘটনাটি ঘটে যখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট’ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখছিলেন। হঠাৎ দরজাগুলো খুলতে দেখে তিনি অবাক হয়ে স্পিকারকে প্রশ্ন করেন, “সব দরজা খোলা কেন?”
উত্তরে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এসিতে কিছু বৈদ্যুতিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে, তাই সদস্যদের অস্বস্তি কমাতে দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (PWD) কর্মীদের ডেকেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। এসি কিছু সময়ের জন্য সচল হলেও বারবার তা বিকল হয়ে পড়ে, যার ফলে একাধিকবার দরজা খোলা ও বন্ধ করতে হয়।
অস্বস্তিকর পরিবেশ: বাইরের শব্দে ব্যাহত অধিবেশন
পুরো দ্বিতীয়ার্ধ জুড়েই এসি কার্যত অচল ছিল। অধিবেশন শেষ হয় বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে। বাইরের করিডরের জানলা-দরজা খোলা থাকায় অধিবেশন কক্ষে বাইরে থেকে ক্রমাগত শব্দ প্রবেশ করতে থাকে, যা স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কে বিঘ্ন ঘটায়। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে অধিবেশন চালানো বিধায়কদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। অনেকেই প্রকাশ্যেই নিজেদের অস্বস্তির কথা জানান।
মোটের উপর, এদিনের এসি বিভ্রাট বিধানসভার কর্মদিবসটিকে পরিণত করে এক অস্বস্তিকর এবং খানিকটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ অবশ্য দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তবে এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই বিধানসভার ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে, যখন প্রচণ্ড গরমেও চলতে হয়েছে রাজ্যের আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া।