আষাঢ়ের প্রথম সকাল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ যেন এক উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এসে গেল সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত “রুপোলি শস্য” – ইলিশ! সোমবার ভোরবেলা নামখানার খেয়াঘাটে একের পর এক ফিরে আসে প্রায় ২৫টি ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারই উপচে পড়ছে টাটকা ইলিশে। হিসেব বলছে, একদিনেই উঠেছে প্রায় ২৫ টন ইলিশ! এমন সাফল্যে উপকূলের মৎস্যজীবীরা আনন্দে আত্মহারা।
প্রত্যেকটি ট্রলারেই রয়েছে চমৎকার গড়নের, ঝকঝকে রুপোলি ইলিশ। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণেই মাছ ধরা এত সফল হয়েছে। তাঁদের কথায়, “এবারের শুরুটা খুবই ভালো হয়েছে। এমন আবহাওয়া থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বাজার ইলিশে ভরে উঠবে।” কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিও আশাবাদী, বর্তমান আবহাওয়া বজায় থাকলে আরও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।
তবে, যে সমস্ত ইলিশপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে বাজারের দিকে তাকিয়ে আছেন, তাঁদের জন্য এখনও কিছুটা অপেক্ষা। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় দাম কিছুটা চড়া থাকবে। তবে সংগঠনগুলি আশ্বাস দিয়েছে যে, যত বেশি জাল পড়বে, দাম ততটাই কমবে। খুব শীঘ্রই সাধারণ মানুষও এই রুপোলি শস্যের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন।
মৎস্যজীবী থেকে ট্রলার মালিক – সবার মুখে এখন এক চিলতে হাসি। গত কয়েক বছর ধরে মরসুমের শুরুতে হতাশাই ছিল তাঁদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এবার যেন ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।
সাগরের হাওয়ায় এখন ইলিশের মন মাতানো ঘ্রাণ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে ফিরে এসেছে সেই চেনা ছন্দ, আর রুপোলি মাছের আলোয় গ্রামের ঘরে ঘরে আজ খুশির ঝলক। এবার শুধু অপেক্ষা, এই ইলিশ কবে পৌঁছবে শহরের হেঁশেলে, কড়াই-খুন্তির সঙ্গী হয়ে!