বেঙ্গালুরুর এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে এক মর্মান্তিক ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (RCB) দলকে বরণ করে নিতে আসা বিপুল সংখ্যক ভক্তের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্টেডিয়ামের বাইরে যখন অসহনীয় ভিড় উপচে পড়ছিল, তখন পুলিশকে লাঠিচার্জ করতেও দেখা যায়। তবে, এই দুর্ঘটনার পরেও স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে বিরাট কোহলি এবং আরসিবি খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশাল অনুষ্ঠান যথারীতি উদযাপিত হয়েছে, যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে আজ সন্ধ্যায়, যখন আরসিবি দল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে পৌঁছায়। প্রিয় খেলোয়াড়দের এক ঝলক দেখতে স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষের ঢল নামে। জনস্রোত এতটাই বেশি ছিল যে, স্টেডিয়ামের গেটে তালা পড়ে যাওয়ার পরেও ভক্তরা সেখানে ভিড় জমাতে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। পুরুষ পুলিশের পাশাপাশি মহিলা পুলিশকেও ভিড় সরাতে লাঠিচার্জ করতে দেখা যায়।
প্রাথমিকভাবে ৩ জনের পদপিষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও, পরে সেই সংখ্যা ৭ জনে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া, বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেও চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে আরসিবি’র খেলোয়াড়দের নিয়ে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিরাট কোহলি ও অন্যান্য খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশাল আকারের উদযাপন করা হয়েছে। বাইরে যেখানে ভক্তদের মৃত্যুর খবর আসছে, সেখানে এই ধরনের অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া নিয়ে তীব্র বিতর্ক এবং জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মানবজীবনের চেয়ে কি একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান বেশি গুরুত্বপূর্ণ? যখন স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষ পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন, তখন কিভাবে স্টেডিয়ামের ভেতরে আনন্দ উদযাপন চলতে পারে? এই ঘটনা আরসিবি কর্তৃপক্ষ এবং আয়োজকদের সংবেদনশীলতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তৈরি করেছে।
এই ঘটনায় মৃতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে। তবে, কিভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হলো এবং কেন ভিড় নিয়ন্ত্রণের সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। পাশাপাশি, এমন মর্মান্তিক ঘটনার পরেও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়ার পেছনে কি কারণ ছিল, তা জানতেও চাইছে সাধারণ মানুষ। এই ঘটনা বেঙ্গালুরুর ক্রীড়া ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে রইল।