ভিটামিন ডি: রোগ প্রতিরোধ থেকে হাড়ের স্বাস্থ্য, অভাব হলে শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দেয়!

ভিটামিন ডি তার বহুমুখী উপকারে মানুষের জীবনে নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। করোনাকালে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি এর উপকারিতা অনস্বীকার্য। সাধারণত খাবার ও সকালের রোদ থেকে ভিটামিন ডি মেলে। তবে অনেকেই সকালের রোদ শরীরে লাগাতে পারেন না। অন্যদিকে পুষ্টিকর খাবার না খেলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি মেলে না। তাই এই ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় অনেকের শরীরেই।

ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শিশুদের রিকেট রোগ, বড়দের অস্টিওমিলেশিয়া (হাড় নরম হয়ে যাওয়া) এবং বয়স্কদের হাড়জনিত ক্ষয় রোগ (অস্টিওপোরোসিস) আটকাতে দারুণ উপযোগী এই ভিটামিন। ভিটামিন ডি এর অন্যতম একটি গুণ হলো অন্ত্রে ক্যালসিয়ামের শোষণ ও ফসফরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। ১৮ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধিতে ভিটামিন ডি এর অবদান আছে। এই ভিটামিনের অভাবে শিশুর হাড় নরম থেকে যেতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
হাড় ও গাঁটের সমস্যা: ভিটামিন ডি এর অত্যাবশ্যকীয় অভাবে পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যেতে পারে (রিকেট)। এছাড়াও গাঁটে ব্যথা এবং বৃদ্ধদের বাতের সমস্যা ভোগায়। থাইরয়েডে সমস্যা, মেরুদণ্ডের ব্যথা ও অসময়ে দাঁত পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে।
ঘনঘন অসুস্থতা: ঘনঘন অসুস্থ হওয়া এবং বিভিন্ন রোগ সারতে দেরি হওয়া শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ হতে পারে।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে ভিটামিন ডি এর অভাবে। ঘা শুকাতেও অনেকটাই সময় লেগে যায়, যা দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের ইঙ্গিত।
ক্লান্তি ও অবসাদ: অকারণে ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে। এটি দৈনন্দিন কাজকর্ম ও উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে।
চুল পড়া: অতিরিক্ত চুল ঝরার সমস্যায় ভোগেন অনেকে। খাবারে ভিটামিন ডি কম হলে চুল ঝরে যেতে পারে। ভিটামিন ডি চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
শরীর ম্যাজম্যাজ: শরীরে ম্যাজম্যাজে ভাব, হাত-পায়ে যন্ত্রণা, জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণও হতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে, যা পেশী দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।
অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস: হঠাৎ ওজন কমতে থাকা শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করার পরও ওজন কমা ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে হতে পারে।
ভিটামিন ডি এর দৈনিক চাহিদা:
কার শরীরে কতটুকু ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন তা নির্ভর করে বয়স অনুযায়ী:

পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬০০ ইউনিট (IU) বা ১৫ মাইক্রোগ্রাম (µg) ভিটামিন ডি এর চাহিদা থাকে।
অন্যদিকে, ৭০ এর বেশি বয়স যাদের, তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮০০-১২০০ ইউনিট (IU) বা ২০-৩০ মাইক্রোগ্রাম (µg)।
বয়স অনুপাতে ভিটামিন ডি এর চাহিদা ২৫-১০০ মিলিগ্রাম নয়, বরং মাইক্রোগ্রামে (µg) বা আন্তর্জাতিক ইউনিটে (IU) পরিমাপ করা হয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy