স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া মানে শুধু ভালো জিনিস খাওয়া নয়, সেই খাবারগুলো কীভাবে খাচ্ছেন তার উপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। কিছু খাবার অত্যাধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হলেও, আমাদের শরীর একা সেগুলোকে ভালোভাবে শোষণ করতে পারে না। সঠিক খাবারের সংমিশ্রণ এক্ষেত্রে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে এবং খাবারের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। কিছু খাবারের জুটি একসঙ্গে খেলে তা সুপারফুডের মতো কাজ করে এবং আপনার খাদ্য ও স্বাস্থ্যকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই ৫টি খাবারের জুটির কথা—
১. গোল মরিচ ও হলুদ:
বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদে কারকিউমিন নামক একটি শক্তিশালী প্রদাহ-বিরোধী যৌগ থাকে। তবে আমাদের শরীর কারকিউমিনকে একা তেমনভাবে শোষণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে গোল মরিচ সহায়ক হতে পারে। গোল মরিচে পাইপেরিন নামক একটি উপাদান থাকে, যা কারকিউমিনের শোষণ ক্ষমতা অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। প্রদাহ কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এই দুটি উপাদান একসঙ্গে খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
২. গুড় এবং ঘি:
গুড় একটি খনিজ সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক মিষ্টি। অন্যদিকে ঘি তার স্বাস্থ্যকর চর্বির জন্য পরিচিত এবং এটি হজমক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুটি খাবার যখন একসঙ্গে খাওয়া হয়, তখন তা অন্ত্রের জন্য এক দারুণ শক্তিশালী মিশ্রণ তৈরি করে। এটি হজমশক্তি বাড়াতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং খাবারে প্রাকৃতিক মিষ্টি যোগ করতে সাহায্য করে।
৩. লেবু এবং ডাল:
ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রনেরও একটি চমৎকার উৎস। তবে উদ্ভিজ্জ আয়রন আমাদের শরীর খুব সহজে শোষণ করতে পারে না। ডালে লেবুর রস যোগ করলে তা ভিটামিন সি-এর জোগান দেয়, যা আয়রন শোষণে অত্যন্ত সহায়ক। এই সহজ কৌশলটি আপনার ডালের পুষ্টিগুণ অনেক বাড়িয়ে তোলে এবং শরীরে শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪. গ্রিন টি এবং দারুচিনি:
গ্রিন টি ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা হৃদরোগের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পরিচিত। তবে ক্যাটেচিন আমাদের শরীরে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারে না। গ্রিন টির সঙ্গে দারুচিনি মিশিয়ে খেলে তা ক্যাটেচিনের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর পাশাপাশি, এটি প্রদাহ-বিরোধী উপকারিতাও প্রদান করে।
৫. সালাদে অলিভ অয়েল:
ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-এর মতো অনেক ভিটামিন ফ্যাট-সলিউবল অর্থাৎ চর্বিতে দ্রবণীয়। এর অর্থ হল, এই ভিটামিনগুলো সঠিকভাবে শোষণ করার জন্য শরীরে স্বাস্থ্যকর চর্বির প্রয়োজন। তাই এই প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলোকে আরও ভালোভাবে শোষণ করতে আপনার সালাদে সামান্য অলিভ অয়েল ছড়িয়ে দিন। এটি ত্বক, চোখের স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সহায়ক হবে।