বহুকাল আগে মেয়েদের পিরিয়ড চলাকালীন কাপড় ব্যবহারের চল ছিল, তারপরে ধীরে ধীরে এল স্যানিটারি ন্যাপকিন, ট্যাম্পন। ইদানীং অবশ্য অনেকেই ঋতুস্রাবের দিনগুলোতে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করেন। তবে বেশিরভাগ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। যেহেতু মেনস্ট্রুয়াল কাপ যোনির ভিতরে প্রবেশ করাতে হয়, তাই অনেকেই এই কাপ ব্যবহার করতে ভয় পান। কিন্তু মেনস্ট্রুয়াল কাপ যেমন সুরক্ষিত, তেমনই খরচও স্যানিটারি ন্যাপকিনের থেকে অনেক কম। যে কোনও বয়সের মেয়েরাই এটি ব্যবহার করতে পারেন, আর বিভিন্ন সাইজেরও পাওয়া যায়।
মেনস্ট্রুয়াল কাপ অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এটি স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ট্যাম্পুনের মতো রক্ত শুষে নিতে পারে না ঠিকই, কিন্তু পিরিয়ডের সময় ইনফেকশনের সম্ভাবনা রুখতে সাহায্য করে। একটি কাপ বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করা যায়। তবে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের আগে অবশ্যই কিছু বিষয়ের দিকে নজর দেওয়া উচিত –
মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাকেটের ওপর লেখা নির্দেশাবলী ভাল করে পড়ুন। কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে, কাপ পরিষ্কার এবং সংরক্ষণ করার পদ্ধতি জেনে নিয়ে তারপরেই ব্যবহার করুন।
মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করার আগে সেটি অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করুন। এর জন্য ফুটন্ত জলে ৬-১০ মিনিট মতো কাপটি রেখে দিন। প্রতি মাসে কাপ ব্য়বহারের আগে অবশ্যই এই ভাবে স্টেরেলাইজ করে নেবেন। তাছাড়া, মেনস্ট্রুয়াল কাপ প্রতিবার ব্যবহার করার পর খুব ভাল করে গরম জলে ধুয়ে স্টেরিলাইজ করতে হয়। ঋতুস্রাব শেষ হয়ে গেলে কাপটি ভাল করে গরম জলে ফুটিয়ে ব্যাগে ভরে রেখে দিন এবং পরের মাসে আবার ব্যবহার করুন।
পিরিয়ডের সময় মেনস্ট্রুয়াল কাপ পরার আগে এবং অপসারণের আগে হাত ভাল করে ধোওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে হাতের থেকে কোনও জীবাণু সংক্রমণ না হয়। ঋতুস্রাব চলাকালীন কিন্তু জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে।
প্রত্যেকের শরীরের বাহ্যিক ধরন যেমন আলাদা হয়, ঠিক তেমনই বয়স, ব্লাড ফ্লো, জরায়ু এবং আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কি না তার উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা সাইজের মেনস্ট্রুয়াল কাপ রয়েছে। এক একটি বয়স সীমার জন্য এক এক রকম মাপের আসে। স্মল, মিডিয়াম ও লার্জ তিন ধরনের সাইজেই পাওয়া যায়। এটি কেনার আগে অবশ্যই আপনার বয়স অনুযায়ী সেই মাপের কাপ কিনবেন, নাহলে সেই কাপ আপনার ছোটো বা বড় হতে পারে।
মেনস্ট্রুয়াল কাপ ঢোকানোর জন্য বিভিন্ন রকমের ফোল্ড করা যায়। আপনি সি-এর মতো করে কাপটি ভাঁজ করে যোনিপথে প্রবেশ করাতে পারেন। প্রবেশ করানোর পর নিজে থেকেই কাপের ভাঁজ খুলে যায় এবং নিজেকে যোনির মধ্যে ফিট করে নেয় কাপ। চারপাশে আঙুল দিয়ে দেখে নেবেন কোনও জায়গায় ফাঁক রয়ে গিয়েছে কি না। প্রয়োজনে হাঁটু ভাঁজ করে বসে নিন এবং একটু কাত করে কাপটি প্রবেশ করান। যখন মনে হবে যে কাপটি ভরে গেছে তখন আবার ওই ভাবে বসুন এবং ধীরে ধীরে কাপ বাইরে বের করুন।