গাড়ি চালানোর সময় নিরাপদ কিছু নিয়ম জেনেনিন

নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকেরই কর্তব্য। প্রত্যেক দেশেই নিজস্ব কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলা ও আইন-কানুন থাকে, যা দেশের নাগরিকদের মেনে চলতে হয়। তবেই আপনি সেই দেশের একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে পরিচিত হবেন। এছাড়াও আপনি যদি একজন শুদ্ধ অথবা ভালো মানুষ হতে চান, তাহলে পথ চলার ক্ষেত্রেও আপনাকে অবশ্যই কিছু শুদ্ধাচার মেনে চলতে হবে।

যদি তা আপনার পক্ষে সম্ভব হয়, তবে দেখবেন আপনি চমৎকার এক জগতে প্রবেশ করেছেন। শুদ্ধ হওয়া বিষয়টি কখনোই আপনা আপনি হয় না। শুদ্ধ হওয়ার জন্যে আপনাকে অবশ্যই এর চর্চা করতে হবে। এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই। সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চা করতে হয়, শুদ্ধ মানুষ হওয়ার ব্যাাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।

চলুন এবার জেনে নেয়া যাক শুদ্ধ মানুষ হিসেবে যানবাহনের চালক, সহযোগী, কন্ডাক্টরদের কি কি বিষয় মেনে চলতে হবে-

>> ট্রাফিক আইন মেনে চলুন।

>> ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় হালনাগাদ অবস্থায় সঙ্গে রাখুন।

>> গাড়ি চালানোর শুরুতে দেখে নিন সবকিছু ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা। জ্বালানি পর্যাপ্ত আছে কিনা তাও দেখে নিন।

>> গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না।

>> হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন বাজাবেন না।

>> সবার আগে যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামবেন না। অন্য যানবাহনকে ধাক্কা দেবেন না, কোণঠাসা করবেন না। নির্দিষ্ট লেন মেনে চলুন। প্রয়োজনে অন্য গাড়িকে আগে যেতে দিন।

>> অযথা হর্ন বাজাবেন না। সিগন্যাল ছাড়ার পরও সামনের গাড়িকে দ্রুত যাওয়ার জন্যে হর্ন দিতে থাকবেন না। শুধু প্রয়োজনে ও সহনীয় মাত্রায় হর্ন ব্যবহার করুন।

>> পথচারীদের সাবধান করতে দূর থেকেই হর্ন বাজান। ঠিক পেছনে এসে হঠাৎ হর্ন দেবেন না।

>> গাড়িতে রেডিও বা গান বাজালে শব্দ যেন শুধু গাড়ির ভেতরেই শোনা যায় এমন মাত্রায় রাখুন।

>> অন্য কোনো বাহনের সঙ্গে ধাক্কা বা আঁচড় লাগলে রাস্তায় নেমে হইচই না করে যথাসম্ভব শান্তভাবে তা মীমাংসা করুন এবং পরবর্তী করণীয় ঠিক করুন।

>> পথচারী বা অন্য গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা ঠেকাতে হঠাৎ ব্রেক করতে হলে কোনো কটু মন্তব্য বা গালি ছুড়বেন না।

>> নির্ধারিত স্টপেজে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তুলুন।

>> গাড়ি এমনভাবে চালান যেন কাদা বা জল পথচারীর গায়ে ছিটকে না আসে।

>> পাবলিক বাসে গায়ে হাত দিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো থেকে বিরত থাকুন।

>> অচেনা কোনো জায়গায় গেলে সম্ভব হলে সঙ্গে রোডম্যাপ রাখুন অথবা জিপিএস-এর সাহায্য নিন।

>> মাঝপথে গাড়ি বিকল হয়ে গেলে সহযোগিতায় এগিয়ে আসা ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান।

>> অহেতুক শর্টকাট খুঁজবেন না। ছোট গলিতে বড় গাড়ি ঢুকিয়ে অন্যদের চলাচলের পথ আটকে রাখবেন না।

>> ট্রাফিক সিগনালে জেব্রা ক্রসিং ঢেকে গাড়ি দাঁড় করাবেন না।

>> ভাড়া ঠিক করে যাত্রী তুলুন। লোভে পড়ে বা যাত্রীকে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করবেন না। ভাড়ায় বনিবনা না হলে কটু মন্তব্য করবেন না।

>> সহযোগী বা হেলপারকে গাড়ি চালাতে দিয়ে নিজে (চালক) চা-সিগারেটের বিরতিতে যাবেন না।

>> শিশু, মহিলা ও প্রবীণ যাত্রী ওঠা-নামার সময় ট্যাক্সি বা গাড়ির দরজা খুলে দিতে সচেষ্ট থাকুন। ওঠা-নামার জন্যে পর্যাপ্ত সময় দিন।

>> হাসপাতাল, ব্লাড ব্যাংকের সামনে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং এয়ারপোর্ট, রেল স্টেশন, লঞ্চ ঘাট, বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীদের বিপদ বা অসহায়ত্বের সুযোগ নেবেন না।

>> আপনার বাহনে যাত্রী ভুলবশত কিছু ফেলে গেলে তা ফেরত দিতে সচেষ্ট থাকুন।

>> উড়ালসড়ক বা ফ্লাইওভারে যানবাহন থামিয়ে যাত্রী নামাবেন না।

>> নির্ধারিত গতিসীমার মধ্যে থেকেই গাড়ি চালান।

>> রিকশা বা সাইকেল কিংবা মোটর সাইকেল নিয়ে রোড ডিভাইডার বা সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে পার হবেন না।

>> মূল রাস্তায় জ্যাম থাকায় ফুটপাতে সাইকেল বা মোটর সাইকেল তুলে দেবেন না। ফুটপাত শুধু পথচারীদের জন্যেই।

>> ফাঁকা রাস্তা পেলে বা ট্রাফিক পুলিশ না থাকলে সিগন্যাল অমান্য করা বা রং সাইড দিয়ে গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকুন।

>> যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছে আপনাকে ধন্যবাদ দিলে আপনিও প্রত্যুত্তরে ধন্যবাদ দিন। তাদের কাছে দোয়া কামনা করুন।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy