চলতি কথায় তার নাম ‘নীল ছবি’। একসময় বটতলার নিষিদ্ধ চটি বই হিসেবে যা পরিচিত ছিল, এখন তার বিস্তৃতি ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। তবে নিষিদ্ধ তকমাটা এখনও তার গা থেকে পুরোপুরি মুছে যায়নি, এখনও পর্নোগ্রাফিক ছবির সঙ্গে গোপনীয়তা বা লজ্জার ব্যাপারটা বেশ নিবিড়ভাবেই যুক্ত। তাই বিবাহিত দম্পতিরা পর্নোগ্রাফি দেখলেও সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছ থেকে সাধারণত সে কথা গোপনই রাখেন। প্রশ্ন হল, কেন? সেক্সোলজিস্টরা বলেন, পর্নোগ্রাফিকে পুরুষ ও মহিলারা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন। পুরুষদের কাছে পর্নোগ্রাফি একটা নির্দোষ যৌন উত্তেজক ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু মেয়েরা বিষয়টাকে একধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বলেই মনে করেন, কারণ এ ক্ষেত্রে সম্পর্ক বহির্ভূত একটা জায়গা থেকে যৌন তৃপ্তির খোঁজ করা হয়। তা হলে পর্নোগ্রাফিক ছবি দেখা কি সত্যিই খারাপ? আসুন জেনে নিই, পুরুষ ও মহিলা ভেদে নীল ছবি দেখার ভালো আর খারাপ দিকগুলো।
পুরুষদের ক্ষেত্রে:
ভালো দিক
স্ট্রেস কমায়
যে কোনও রকম যৌন ক্রিয়া ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, এ কথা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। পরিমিত পর্ন দেখলে পুরুষদের মানসিক চাপ কমে, তাঁরা যৌন তৃপ্তি পান। ইজ্যাকুলেশন স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ কমায় এবং স্বাভাবিকভাবেই মন ফুরফুরে হয়ে ওঠে। কোন বিষয়টা তাঁকে সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত করছে, সেটা একজন পুরুষ সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারেন পর্ন দেখলে। সেখান থেকে কিছু রসদ নিয়ে বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারলে যৌনজীবন আরও রঙিন হয়ে উঠবে, এটাই স্বাভাবিক!
খারাপ দিক
আগ্রাসী মনোভাব
অতিরিক্ত পর্নোগ্রাফিক ছবি যে সব পুরুষ দেখেন, তাঁরা মেয়েদের নিচু চোখে দেখতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকেই যায়। পর্নোগ্রাফির জগৎটা কিন্তু শেষ পর্যন্ত কল্পনার, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই। যে সব পুরুষ সেটা মনে রাখতে পারেন না, সঙ্গিনীর প্রতি আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে ফেলেন, তাঁদের সমস্যা হতে বাধ্য।
মেয়েদের ক্ষেত্রে:
ভালো দিক
যৌন চাহিদা প্রকাশ করতে সহায়ক
চিকিৎসকেরা বলেন, যে সব মহিলার যৌন কামনার তাগিদ কম, তাঁরা পর্নোগ্রাফি দেখলে নিজেদের কামনার মুক্তি ঘটাতে পারেন। প্রাথমিক লজ্জা বা দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারলে ইরোটিকা বা পর্নোগ্রাফি তাঁদের সেক্স ড্রাইভ জোরদার করে, বিছানায় বাড়তি আত্মবিশ্বাসও জোগায়। স্বামী বা পার্টনারের সঙ্গে সম্পর্কের বাঁধনটাও তাতে মজবুত হয়ে ওঠে।
খারাপ দিক
নিজের শরীর নিয়ে অতিরিক্ত খুঁতখুঁতেভাব
পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হল, এখানে যে সব মেয়েদের দেখা যায় তাঁদের শারীরিক গঠন, সৌন্দর্য, সব কিছুই একশো শতাংশেরও বেশি নিখুঁত। বাস্তবে অমন নিখুঁত শরীর বা সৌন্দর্যের অধিকারিণী কেউ নেই বললেই চলে। তাই পরদায় তাঁদের দেখার পর নিজের চেহারাটা নিয়ে হীনম্মন্যতা বোধ তৈরি হতে পারে। মনে রাখবেন, পর্নোগ্রাফির জগৎটা নিছক কল্পনা এবং তার কাজ হল আপনার বাস্তব জীবনটাকে আর একটু রঙিন করে তোলা। এর বেশি গুরুত্ব তাকে দেওয়ার কোনও দরকার নেই।