আইপিএল ফাইনালে পাঞ্জাব কিংস, কেকেআরকে সূক্ষ্ম খোঁচা দিলেন শ্রেয়াস!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল ২০২৫)-এর কোয়ালিফায়ার ২-এ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব কিংসের রোমাঞ্চকর পাঁচ উইকেটের জয়ের পর অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার তার প্রাক্তন ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) দিকে একটি সূক্ষ্ম কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, “আমি এটা ভাবিনি যে আমি কোথায় যাব। আমি শুধু একটি ভালো পরিবেশে থাকতে চেয়েছিলাম। আমার মানসিক স্থিতি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে ম্যানেজমেন্ট এবং সকলেই আমাকে খুব আরামদায়ক করে তুলেছে। পরিবেশ সবসময় ইতিবাচক।” এই মন্তব্য প্রথমে সাধারণ মনে হলেও, এটি কেকেআরের প্রতি একটি তীক্ষ্ণ ইঙ্গিত বলে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, যে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে তিনি গত মরসুমে আইপিএল শিরোপা জিতিয়েছিলেন।

কেকেআরের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি:

শ্রেয়াস আইয়ারের কেকেআরের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় ২০২৫ আইপিএল নিলামের ঠিক আগে। ২০২৩ সালে কেকেআরকে তাদের তৃতীয় আইপিএল শিরোপা জিতিয়ে এবং লিগ পর্বে শীর্ষে রাখা সত্ত্বেও, দল নির্বাচনের স্বাধীনতা এবং ড্রেসিং রুমের গতিশীলতা নিয়ে শ্রেয়াসের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। অবশেষে, কেকেআর তাকে ২০২৫ নিলামের আগে মুক্তি দেয়, যা ছিল একটি আশ্চর্যজনক সিদ্ধান্ত। এই ঘটনা ব্যাপক জল্পনার সৃষ্টি করে। পাঞ্জাব কিংস নিলামে শ্রেয়াসকে কিনে নেয় এবং তাকে তাদের প্রথম মরসুমেই অধিনায়ক নিয়োগ করে, যা এখন তাদের জন্য বিশাল ফল দিচ্ছে।

পিবিকেএস বনাম এমআই: একটি অবিস্মরণীয় রাত:

ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স শুরুতে নিয়ন্ত্রণে ছিল। জনি বেয়ারস্টো (৩৮ রান, ২৪ বল), তিলক বর্মা (৪৪ রান, ২৯ বল) এবং সূর্যকুমার যাদবের (৪৪ রান, ২৬ বল) অবদানে তারা ২০৩/৬-এর শক্তিশালী স্কোর গড়ে। তবে, পাঞ্জাবের বোলাররা শেষ ওভারগুলোতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। আজমতউল্লাহ ওমরজাই (২/৪৩), বিশাখ (১/৩০) এবং স্টোইনিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব প্রভসিমরন সিং এবং প্রিয়াংশ আর্যকে হারায়। কিন্তু জশ ইংলিস (৩৮ রান, ২১ বল) এবং নেহাল ওয়াধেরা (৪৮ রান, ২৯ বল) দ্রুত রান তাড়া করতে শুরু করেন। তবে ম্যাচের আসল নায়ক ছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৪১ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে তিনি ৫টি চার এবং ৮টি ছক্কা মারেন, যার স্ট্রাইক রেট ছিল ২১২। জসপ্রীত বুমরাহর মতো অভিজ্ঞ বোলারদের বিরুদ্ধেও শ্রেয়াসের গণনামূলক আক্রমণ মুম্বাইয়ের বোলিং লাইনআপকে ধ্বংস করে দেয়। পাঞ্জাব ১৯ ওভারে লক্ষ্য তাড়া করে, মুম্বাইয়ের ২০০+ রানের স্কোর রক্ষার অপরাজিত রেকর্ড ভেঙে এবং ২০১৪ সালের পর প্রথমবার আইপিএল ফাইনালে জায়গা করে নেয়।

ইতিহাস গড়লেন শ্রেয়াস:

এই জয়ের মাধ্যমে শ্রেয়াস শুধু পাঞ্জাবকে ঐতিহাসিক ফাইনালে নিয়ে যাননি, বরং আইপিএল ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে তিনটি ভিন্ন দল—দিল্লি ক্যাপিটালস (২০২০), কেকেআর (২০২৩) এবং পাঞ্জাব কিংস (২০২৫)—কে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। এই জয় পাঞ্জাব কিংসের জন্য যেমন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল, তেমনই আইয়ারের মন্তব্য কেকেআর ম্যানেজমেন্টের প্রতি একটি বড় বার্তা হয়ে রইল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy