বঙ্গে অধরা স্থায়ী শীত, আর্দ্রতা ও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে দোলাচল, নভেম্বরের শেষে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা

ক্যালেন্ডারে শীতকাল এলেও বাংলার আকাশে শীতের স্থায়ী আগমন এখনও অধরা। উত্তর ভারতে জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল, পঞ্জাব ও দিল্লিতে ইতিমধ্যেই কনকনে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও, পূর্ব ভারতে, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে, শীতের কাঁটা যেন থেমে থেমে নড়ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের মতে, রাতের তাপমাত্রা নামছে ঠিকই, কিন্তু আর্দ্রতা ও সম্ভাব্য বৃষ্টির কারণে এবারও শীত দেরিতে প্রবেশ করতে পারে।

দক্ষিণবঙ্গে পারদ পতন, কলকাতায় ১৮ ডিগ্রি

দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলোতে রাতের তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমেছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মতো জেলাগুলিতে আগামী কয়েকদিনে রাতের পারদ ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছুঁতে পারে। কলকাতাতেও তাপমাত্রার পতন শুরু হয়েছে; নতুন সপ্তাহের শুরুতেই শহরের তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি বা তার সামান্য নীচে নামতে পারে। তবে, আবহাওয়াবিদদের সতর্কতা, নিম্নচাপ বা বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের আগমন ঘটলে শীত আবার সাময়িক বিদায় নেবে এবং তাপমাত্রা বাড়বে।

শীত দেরির কারণ: IMD-র পূর্বাভাসে বৃষ্টি

ভারতের আবহাওয়া দফতরের (IMD) পূর্বাভাস অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই তিন মাসে পূর্ব ভারতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। যখনই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বা বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প রাজ্যে প্রবেশ করবে, তখনই আকাশ মেঘলা হবে এবং রাতের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেবে। আর এই কারণেই শীত এসে উঁকি দিলেও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুষ্ক উত্তর-পশ্চিমী হাওয়া যতদিন না জোরদার ভাবে রাজ্যে প্রবেশ করছে, ততদিন শীত স্থায়ী আসন পাবে না।

উত্তরবঙ্গে কুয়াশা, নভেম্বরের শেষে জাঁকিয়ে শীতের পথ

দক্ষিণবঙ্গে শীতের দোলাচল চললেও, দার্জিলিং, কালিম্পং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে ভোরে ঘন কুয়াশা এবং শীতের ভালোই অনুভূতি টের পাওয়া যাচ্ছে। তবে বেলার দিকে সূর্যের তাপে ঠান্ডার প্রভাব কমে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরের শুষ্ক হাওয়া শক্তিশালী হলে, বাংলায় জাঁকিয়ে শীত পড়ার পথ খুলবে। তার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে। ততদিন পর্যন্ত ঠান্ডা-গরমের এই টানাপোড়েন, হঠাৎ বৃষ্টি বা মেঘলা আকাশ—এই লুকোচুরি চলতেই থাকবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy