দুর্গাপুরের দামোদর নদের সুস্বাদু ‘গ্রেট স্নেক হেড’ বা গজার মাছের চাহিদা এখন তুঙ্গে। শুধু স্থানীয় বাজার নয়, রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট-সহ একাধিক ভিনরাজ্যে রফতানি হচ্ছে এই মাছ। আর সেই কারণেই হু হু করে চড়ছে দামের পারদ, যা এখন সাধারণ দুর্গাপুরবাসীর নাগালের বাইরে।
মৎস্যজীবীদের দাবি, কয়েক বছর আগেও এই মাছের এমন কদর ছিল না। তখন স্থানীয় বাজারে কেজি প্রতি মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় গজার মাছ মিলত। কিন্তু হঠাৎ করেই কলকাতার মাছের আড়তে এর চাহিদা বাড়তে শুরু করে। মৎস্যজীবীরা পরে জানতে পারেন, অসাধারণ পুষ্টিগুণ এবং সুস্বাদু হওয়ায় এই মাছ কলকাতা থেকে ভিনরাজ্যে রফতানি হচ্ছে।
৩০০ টাকার মাছ এখন ৬০০!
ভিনরাজ্যে রফতানির কারণে স্থানীয় বাজারে গজার মাছের জোগান কমতে শুরু করে। এর ফলেই দাম এক ধাক্কায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দুর্গাপুরের পাইকারি মাছের বাজারে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে এই মাছ। স্বাভাবিকভাবেই, মধ্যবিত্ত স্থানীয়দের পাতে পড়া কার্যত বন্ধ।
সাপের মতো মাথার গঠনের জন্য এই মাছের ইংরেজি নাম ‘গ্রেট স্নেক হেড’। দেখতে অনেকটা শোল মাছের মতো হলেও গজার মাছ আকারে অনেক বড় হয়। মৎস্যজীবীদের দাবি, দামোদর নদে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কেজি ওজনের গজার মাছও পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালে সেচ ও শিল্পকার্যের জন্য দামোদর নদের ওপর দুর্গাপুর ব্যারেজ তৈরি হয়। এই জলাধারের মাছ শিকার করেই এক হাজারের বেশি মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। একসময় এই জলাধারের বিখ্যাত গলদা চিংড়ি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও, বর্তমানে গজার মাছের সংখ্যা বৃদ্ধিতে খানিকটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে মৎস্যজীবীদের মধ্যে। দামোদর নদের ধারে থাকা পাঁচটি আড়ত থেকে গজার মাছের বড় অংশ এখন রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে। আড়তদারদের মতে, পুষ্টি ও ঔষধি গুণের জন্যই ভিনরাজ্যে এর এত কদর।