১৪ নভেম্বর দিনটি প্রতি বছর শিশুদিবস হিসেবে পালিত হওয়ার পাশাপাশি, অন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণেও বিখ্যাত। আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস ডে, এবং সেই সঙ্গে পালিত হচ্ছে বাঙালির আবেগের ‘রসগোল্লা দিবস’। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এই দিনেই পালিত হয় রসগোল্লা ডে, যার কারণ বাংলার এই জগৎসেরা মিষ্টির জিআই (Geographic Identification) ট্যাগ লাভ।
‘রসগোল্লা তুমি কার?’ —দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বাংলার জয়:
‘রসগোল্লা তুমি কার?’ —এই নিয়ে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশার সঙ্গে কয়েক দশক ধরে ধুন্ধুমার লড়াই চলেছিল। শেষমেশ ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর রসগোল্লা’র জিআই ট্যাগ লাভ করে বাংলা। দীর্ঘ এই আইনি লড়াই জেতার পর, ‘বাংলার রসগোল্লা’ স্বীকৃতিকে সম্মান জানাতে পরের বছর, ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রসগোল্লা দিবস পালন শুরু হয়। রসে ভেসে থাকা তুলতুলে নরম ছানার গোল্লা দিয়ে শতকের পর শতক ধরে বিশ্বের মন জয় করেছে বাঙালি। রসগোল্লার সঙ্গে মিশে গিয়েছে বাঙালির ঐতিহ্য, আর এই দিনটি সেই ঐতিহ্যকে কুর্নিশ জানায়।
উদযাপন: অভিনব স্বাদের রসগোল্লায় মাত বাঙালি:
সারাবছর রসগোল্লা পাওয়া গেলেও, এই দিনে ক্রেতাদের উৎসাহ থাকে চোখে পড়ার মতো। জয়নগরের প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী রঞ্জিত ঘোষ জানান, “আজ রসগোল্লার দিবসের পাশাপাশি শিশু দিবস। এই রসগোল্লা দিবস মিষ্টির জগতে বিশেষ একটি দিন। আমরা জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করি। এই উপলক্ষে ২০টিরও বেশি ভিন্ন স্বাদের রসগোল্লা আমরা তৈরি করেছি।” তালিকার মধ্যে কাঁচালঙ্কা, পুদিনা, পেস্তা, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাক কারেন্ট, ব্লুবেরি, গন্ধরাজ এবং গুড়ের মতো অভিনব রসগোল্লা রয়েছে। অনেক মিষ্টির দোকানে বিনামূল্যে মিষ্টিমুখেরও আয়োজন করা হয়েছে।
রসগোল্লা দিবস বনাম বিশ্ব ডায়াবেটিস ডে:
মিষ্টি ও মধুমেহ রোগের সম্পর্ক চিরকালীন। একদিকে যখন রসগোল্লা দিবস, ঠিক সেদিনই বিশ্ব ডায়াবেটিস ডে। আপাতদৃষ্টিতে এই দু’টোর মধ্যে কোনো মিল না থাকলেও, প্রশ্নটা সহজ আর উত্তরও জানা—কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের রসগোল্লা খেতে বারণ করা হত এতকাল।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধারণা বদলের সময় এসেছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ: আজীবনের মতো বাঙালিকে মিষ্টি খেতে না-বলা অর্থহীন। সামগ্রিকভাবে গ্লুকোজ আর ক্যালরির ব্যালান্স ঠিক রাখলেই হল। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য রসগোল্লার রসটুকু বাদ দিয়ে ছানার অংশটুকু খাওয়া সবদিক থেকেই ভালো। নিয়ম মেনে খাবার খেলে মধুমেহও নিয়ন্ত্রণ থাকবে।