মস্কো/কিয়েভ: রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধ আবারও জ্বালানি যুদ্ধের (Energy War) রূপ নিয়েছে। রবিবার ইউক্রেন রাশিয়ার ওরেণবার্গ অঞ্চলে অবস্থিত একটি বড় গ্যাস প্ল্যান্টে ড্রোন হামলা চালায়, যার ফলে প্ল্যান্টের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও এই হামলায় কোনো কর্মীর হতাহতের খবর নেই।
রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি কেন্দ্রে হামলা
রাশিয়ান ফেডারেশনের ওরেণবার্গ অঞ্চলের গভর্নর ইয়েভগেনি সোলন্তসেভ নিশ্চিত করেছেন যে, গভীর রাতে হওয়া এই হামলায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস সংস্থার বৃহত্তম প্ল্যান্টগুলির একটিকে লক্ষ্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “কর্মচারীদের কোনো ক্ষতি হয়নি, তবে প্ল্যান্টের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
প্ল্যান্টের গুরুত্ব: ওরেণবার্গ গ্যাস-কেমিক্যাল কমপ্লেক্স রাশিয়ার অন্যতম প্রধান জ্বালানি সম্পদ, যার বার্ষিক গ্যাস উৎপাদনের ক্ষমতা ৪৫ বিলিয়ন ঘন মিটার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন রাশিয়ার তেল এবং জ্বালানি কাঠামোগুলিতে ক্রমাগত হামলা চালানোর ফলে এই সর্বশেষ ঘটনাটি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে।
৪৫টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দাবি করেছে যে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোট ৪৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি ড্রোন সামারা এবং সারাতোভ অঞ্চলে এবং বাকিগুলি ওরেণবার্গ অঞ্চলের আকাশে ধ্বংস করা হয়।
গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগার এবং জ্বালানি কেন্দ্রগুলিতে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ প্রভাবিত হচ্ছে। তবে, ইউক্রেনীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই সর্বশেষ ড্রোন হামলা নিয়ে এখনও কোনো সরকারি বিবৃতি জারি করা হয়নি।
ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপে ডনেটস্ক
এদিকে, ওয়াশিংটন পোস্টের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া টেলিফোনিক কথোপকথনে, পুতিন ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের তার দাবিটি আবারও তুলে ধরেন। রাশিয়া ২০১৪ সাল থেকেই ডনেটস্ক দখল করার চেষ্টা করছে।
জ্বালানি কাঠামোয় ক্রমবর্ধমান হামলা থেকে স্পষ্ট যে, এই যুদ্ধ এখন আর শুধু সামরিক ফ্রন্টে সীমাবদ্ধ নেই, এটি অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত সম্পদের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।