কর্মক্ষেত্রে যেমন বহু মানুষ স্ট্রেসের শিকার হন, তেমনই ছাত্রজীবনেও স্ট্রেসের পরিমাণ কম নয়। কেরিয়ারের জন্য পড়াশোনা হোক কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতি, আধুনিক সময়ে শিক্ষার্থীদের জীবনে স্ট্রেস ক্রমশ বাড়ছে। এই স্ট্রেসের সঙ্গে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে পরীক্ষার ফল খারাপ হতে পারে, কেরিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে এবং সামগ্রিকভাবে হতাশাজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিনের স্ট্রেসকে কীভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ অরিজিৎ চক্রবর্তী (কনসালটেন্ট নিউরোলজিস্ট, মণিপাল হাসপাতাল)। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি স্ট্রেস মোকাবিলার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় তুলে ধরেছেন।
ডাঃ চক্রবর্তী জানান, “প্রথমত আমাদের জানতে হবে স্ট্রেস কীভাবে আমাদের জীবনে আসে। মূলত, আমরা যে কাজ করি, সেখান থেকেই স্ট্রেসের উৎপত্তি। যখন কোনো কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা নিয়ে মনে দুশ্চিন্তা বা চাপ সৃষ্টি হয়, তখনই আমরা স্ট্রেস অনুভব করি।”
তিনি আরও বলেন, “অতিরিক্ত স্ট্রেস অনেক সময় মানুষকে দুর্বল ও অলস করে তোলে। এর ফলে কর্মক্ষমতা এবং প্রোডাক্টিভিটিও হ্রাস পায়। তাই অতিরিক্ত স্ট্রেস কেবল স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে না, কাজেরও ক্ষতি করে।” তবে কিছু সহজ অভ্যাসের মাধ্যমে এই স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ অরিজিৎ চক্রবর্তী নিম্নলিখিত পরামর্শগুলি দিয়েছেন:
একক বিষয়ে মনোযোগ: যখন যে কাজ করছেন, সেই কাজে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন। পড়াশোনার সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করা বা অন্য কাজ পরিহার করুন। এতে স্ট্রেস কমার পরিবর্তে আরও বাড়ে।
আউটডোর অ্যাক্টিভিটি বৃদ্ধি: দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ম করে খেলাধুলা, হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানোর মতো আউটডোর অ্যাক্টিভিটি করুন। এটি স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সহায়ক।
শখের প্রতি মনোযোগ: সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা বা অন্য যেকোনো শখের জন্য সময় বের করুন। কাজের চাপের মাঝেও এইগুলি মনের প্রশান্তি এনে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম: স্ট্রেস মানসিক ও শারীরিক উভয় দিক থেকেই প্রভাব ফেলে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম স্ট্রেসের একটি বড় ওষুধ। প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অপরিহার্য। অস্বাস্থ্যকর খাবার স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে শরীরের ক্ষতি করে।
ডাঃ চক্রবর্তী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা। ব্যক্তিভেদে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা ভিন্ন হতে পারে। তাই কোনো সমস্যায় এই প্রতিবেদনের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর না করে ব্যক্তিগতভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।