যেখানে গোটা দেশে দীপাবলির জাঁকজমক এবং প্রস্তুতি তুঙ্গে, সেখানে হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলার সাম্মু গ্রামে পিনপতন নীরবতা। এখানকার বাসিন্দাদের দেখে মনে হচ্ছে যেন উৎসব অনেক মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে।
গ্রামবাসীদের দাবি, তাদের সাম্মু গ্রামটি শত শত বছর ধরে অভিশাপগ্রস্ত। এই অভিশাপের ভয়ে গ্রামের মানুষজন দিওয়ালি উদযাপন তো দূরের কথা, সেদিন বাড়িতে কোনো রান্নাও করেন না।
বাজি ফাটালেই নেমে আসে ‘বিপর্যয়’
গ্রামের মানুষের দাবি, যদি কোনো পরিবার ভুল করেও দীপাবলির দিন বাজি ফাটানোর চেষ্টা করে বা বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না করে, তবে গ্রামে হয় আগুন বা কোনো বড়সড় বিপর্যয় নেমে আসে, অথবা সেই পরিবারে অকাল মৃত্যু ঘটে। এই আতঙ্কের কারণে গ্রামবাসীরা শত শত বছর ধরে এই উৎসব পালন থেকে বিরত থেকেছেন।
গ্রামের মানুষ বহুবার এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সফল হননি। বাধ্য হয়ে আজও দীপাবলির দিন তারা ঘর থেকে বের হতেও ভয় পান।
কী সেই অভিশাপের কারণ?
গ্রামবাসীরা এই অদ্ভুত ঐতিহ্যের পেছনের কারণটি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ঘটনাটি ঘটেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়।
সেই সময় গ্রামের এক মহিলা দীপাবলি উপলক্ষে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলেন।
গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে পৌঁছতেই তিনি দেখেন, গ্রামবাসী তাঁর স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে আসছেন। তাঁর স্বামী সেনাবাহিনীতে ছিলেন এবং যুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন।
স্বামীর মৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে সেই মহিলা স্বামীর সঙ্গেই সতী হন।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সতী হওয়ার আগে সেই মহিলা নাকি পুরো গ্রামকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে এই গ্রামের মানুষ আর কোনোদিন দীপাবলি উৎসব পালন করতে পারবে না। সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত গ্রামের মানুষ দিওয়ালি পালন করেন না। এর পরিবর্তে, তারা কেবল সেই সতী হওয়া মহিলার মূর্তির পূজা করেন।