বিহারের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারের অভ্যন্তরীন বিবাদ, যা এবার চরম আকার ধারণ করেছে। মেয়ে রোহিণী আচার্যের পর এবার লালুর আরও চার মেয়ের সঙ্গে পরিবারের (বিশেষত ছোট ভাই তেজস্বী যাদবের) দূরত্ব বৃদ্ধির জল্পনা তৈরি হয়েছে। রবিবার লালুপ্রসাদের চার মেয়েকে নিজেদের পরিবার নিয়ে পটনা ছেড়ে চলে যেতে দেখা গিয়েছে।
সংবাদসংস্থা এএনআই-এর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে লালুপ্রসাদের চার মেয়ে রাগিনী যাদব, ছন্দা যাদব এবং রাজলক্ষী যাদবকে নিজেদের পরিবারের সঙ্গে পটনা বিমানবন্দর ত্যাগ করতে দেখা যায়। এর ঘণ্টাখানেক পর পিটিআই-এর একটি ভিডিও-তে লালুপ্রসাদের চতুর্থ মেয়ে হেমা যাদবকে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছতে দেখা যায়। অন্য একটি ভিডিওতে রাগিনী, ছন্দা এবং রাজলক্ষীকে দিল্লিতে আরজেডি নেত্রী এবং লালু প্রসাদের আর এক মেয়ে মিসা ভারতীর বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়।
রোহিণী আচার্যের বিস্ফোরক অভিযোগ
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি-র বিপর্যয়ের পরই লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য পরিবার এবং দলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছিলেন। এর পরেই সমাজমাধ্যমে তিনি একাধিক বিস্ফোরক পোস্ট করেন, যেখানে পরিবারের অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে আসে।
সমাজমাধ্যমে রোহিনী গুরুতর অভিযোগ করে দাবি করেন, নিজের বাপের বাড়িতেই তাঁকে অপমান এবং হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে। নাম না করে তিনি সরাসরি নিজের ভাই এবং বিহারের নির্বাচনে আরজেডি-র মুখ তেজস্বী যাদবের দিকেই আঙুল তোলেন। যদিও রোহিনী দাবি করেন, তাঁর বাবা এবং মায়ের পূর্ণ সমর্থন তাঁর দিকেই রয়েছে। কীভাবে পারিবারিক অশান্তি এই পর্যায়ে পৌঁছল, সমাজমাধ্যমে সেই ঘটনাক্রমও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন রোহিনী।
বোনেদের আত্মত্যাগ নিয়ে রোহিণীর প্রশ্ন
রোহিণী তাঁর পোস্টে জানিয়েছিলেন যে, শুধু তাঁর বাবা-মা নয়, তাঁর বোনেরাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। পরিবারে তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি লেখেন:
“এরকম বাবা-মা পাওয়া ভাগ্যের। সব পরিবারেই কেন শুধুমাত্র বোনেদেরই আত্মত্যাগ করতে হবে, বিশেষত যেখানে ভাইয়েরা আছে। ভাইদের অপ্রিয় প্রশ্ন করলে আমাদের শ্বশুরবাড়িতে চলে যেতে বলা হয়। তাই আমি শ্বশুরবাড়িতেই চলে যাচ্ছি। আর নিজের ভাইয়ের সঙ্গেও সব সম্পর্ক ত্যাগ করছি।”
রোহিণীর এই ঘোষণার পরই তাঁর বোনেদের পটনা ছেড়ে দিল্লি যাওয়া লালু পরিবারের এই প্রকাশ্য ফাটলকে আরও নিশ্চিত করেছে।
