ডায়াবেটিস থাকলে মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি চার গুণ বেশি! এমনটাই দাবি গবেষকদের

যে সকল নারীদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, তাদের মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি অন্যান্য সুস্থ নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। সম্প্রতি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের এক নতুন গবেষণা এই উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করেছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের মৃত সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা সুস্থ নারীদের তুলনায় চার গুণ বেশি!

গবেষকরা স্কটল্যান্ডের ৪ হাজার ডায়াবেটিক নারীর মেডিকেল তথ্য বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল পেয়েছেন। গবেষণায় উঠে এসেছে, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে গর্ভের সন্তানের মৃত হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের উদ্দেশ্যে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, গর্ভবতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এমনকি গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার আগে থেকেই ডায়াবেটিক নারীদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।

গবেষণায় ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৮৪৭ জন ডায়াবেটিক নারীর ৫ হাজার ৩৯৩টি গর্ভধারণের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের গর্ভের সন্তান মারা যাওয়ার সম্ভাবনা তিন গুণ এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি চার গুণ বেশি।

গবেষকরা আরও উল্লেখ করেছেন, সন্তান ধারণের আগে থেকেই ডায়াবেটিক নারীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। প্রয়োজনে একজন পুষ্টিবিদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। গর্ভধারণের পরিকল্পনা শুরু থেকে গর্ভকালীন ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ মিলিগ্রাম ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট সেবন করা জরুরি, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক। রক্তশূন্যতা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে ডায়াবেটিক নারীদের সঠিক ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাদের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) ২৭ বা তার বেশি, তাদের গর্ভধারণের আগেই ওজন কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। এই গবেষণা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy