মোদী-পুতিন-জিনপিংয়ের বন্ধুত্ব দেখে জ্বলছে আমেরিকা? ট্রাম্পের কড়া মন্তব্যে চাপ বাড়ল ভারতের!

চীনের তিয়ানজিন শহরে SCO সামিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ‘বন্ধুত্ব’ দেখে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়েছে। এই ‘ত্রয়ী’ জোটের ঘনিষ্ঠতা আমেরিকা ও তার মিত্রদের মধ্যে স্পষ্টতই অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। একদিকে যখন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উচ্চ শুল্ক নীতির সমালোচনা করছেন, তখন তার ঘনিষ্ঠ ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক মধুর হওয়ার আশা করছেন। কিন্তু কেন এই দুই মার্কিন কর্মকর্তার ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য?

‘ভারত খারাপ অভিনেতা’ – স্কট বেসেন্ট

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্ট SCO সামিট নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি রুশ ও চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুত্বকে ‘পূর্বপরিকল্পিত নাটক’ বলে অভিহিত করেন। তার মতে, “দিনের শেষে ভারত সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ এবং তাদের মূল্যবোধ আমেরিকার সঙ্গেই মেলে, রাশিয়া-চীনের সঙ্গে নয়।” বেসেন্ট রুশ যুদ্ধকে উস্কানি দেওয়ার জন্য ভারত, রাশিয়া ও চীনকে ‘খারাপ অভিনেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “এমন একটা সময় আসবে যখন আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।”

তবে একই সঙ্গে তিনি ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের শক্তিশালী ভিত্তি আছে এবং তারা দ্রুত সমস্যার সমাধান করে ফেলবে। যদিও রাশিয়া থেকে একটানা তেল কেনার জন্য তিনি ভারতের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, এই পদক্ষেপ মস্কোকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে।

‘এখন শুল্ক শূন্যে নামাতে চাইছেন’ – ট্রাম্পের অভিযোগ

অন্যদিকে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেছেন। এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি দাবি করেন, ভারত এখন শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনতে চাইলেও তিনি এতে রাজি নন, কারণ অনেক দেরি হয়ে গেছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, “ভারত আমাদের কাছে বিশাল অঙ্কের পণ্য বিক্রি করে, অথচ আমরা তাদের কাছে কিছুই বিক্রি করতে পারি না। এত বছর ধরে একপেশে সম্পর্ক চলছে।”

ভারতের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাজার পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং আমেরিকার চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না। বিশেষত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার মার্কিন দাবি ভারত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই প্রভাবশালী মার্কিন কর্মকর্তার এই পরস্পরবিরোধী মন্তব্য ওয়াশিংটনের বর্তমান দ্বৈত নীতিরই প্রতিফলন। একদিকে যখন ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে ভারতকে পাশে চায় আমেরিকা, তখন অন্যদিকে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক স্বার্থ নিয়ে তাদের মধ্যেকার বৈপরীত্য প্রকাশ পাচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy