“ধোঁয়া দেখেও কোনও আমল দেননি কর্মীরা”-SMS হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের পরিবারের বিস্ফোরক অভিযোগ

রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের সুপরিচিত সওয়াই মান সিং (SMS) হাসপাতালে রবিবার রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে আটজন রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা প্রত্যেকেই ট্রমা সেন্টারের আইসিইউ (ICU)-তে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতি এবং অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন নিহতদের ক্ষুব্ধ আত্মীয়রা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন আরও পাঁচজন।

‘ধোঁয়া দেখেও কোনও আমল দেননি কর্মীরা’
নিহতদের আত্মীয়দের অভিযোগ, রাত সওয়া ১১টার পর যখন নিউরো ওয়ার্ড থেকে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, তখন তাঁরাই প্রথম হাসপাতালের কর্মীদের সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু কর্মীরা তাঁদের কথায় কোনও আমল দেননি।

এক রোগীর আত্মীয় মর্মান্তিক বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, “রাত সওয়া ১১টার পরে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। আমি ডাক্তারদের আগেই সতর্ক করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা কোনও সাহায্য করেনি। ধোঁয়া তীব্র হওয়ার আগেই ডাক্তার এবং কম্পাউন্ডাররা পালিয়ে গিয়েছিলেন। মাত্র চার থেকে পাঁচজন রোগীকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছিল।” ওই ব্যক্তির মামার ছেলেও এই অগ্নিকাণ্ডে মারা গিয়েছেন।

নিহত আরেক রোগী নরেন্দ্র সিংয়ের মা-ও এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। নরেন্দ্র সিং সংবাদ সংস্থাকে জানান, তিনি যখন রাতের খাবার খেতে নীচে নেমেছিলেন, তখন আগুন লাগার খবর পান। তিনি অভিযোগ করেন, “সেখানে যে সব রোগীর আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাই নিজেদের প্রিয়জনকে বাঁচান। কোনও কর্মী রোগীদের দায়িত্ব নেননি।” তিনি আরও যোগ করেন, ধোঁয়া আরও ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে তাঁর মা ভিতরেই আটকে পড়েন। তাঁর দাবি, হাসপাতালে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শর্ট সার্কিট থেকেই ICU-এর ভিতরে আগুন লাগে এবং বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুরো ওয়ার্ড ঢেকে যায়।

চিকিৎসক অনুরাগ ধাকড় দাবি করেছেন, “ওই মুহূর্তে যতজনকে পারি, বাইরে বের করে নিয়ে আসি। নার্স, ওয়ার্ড বয় এবং ট্রমা সেন্টারের কর্মীরা মিলে ট্রলি এবং স্ট্রেচারে করে রোগীদের বের করার চেষ্টা করেছিলেন।” তাঁর দাবি, ৮ জনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক থাকায় সিপিআর দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

তবে, নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের আঙুল সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকেই। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এই ঘটনা নতুন করে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy