বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেওয়া নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুফান উঠেছে। এবার এই বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সরাসরি প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকারীকে চিহ্নিত করার দাবি তুলেছেন এবং তাদের ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর অংশ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
ঘটনার সূত্রপাত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে। অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রশ্নপত্রে দেশের মহান বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষামহল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এই প্রসঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “যিনি এই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন, তাঁর পরিচয় অবিলম্বে প্রকাশ করা হোক। এরা নির্লজ্জের মতো দেশের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। আমি নিশ্চিত, এরা তথাকথিত ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর অংশ, যারা দেশের সংহতি ও ঐতিহ্যকে খাটো করতে চায়।” তাঁর অভিযোগের তীর সরাসরি রাজ্যের শাসকদলের দিকে।
শুভেন্দু অধিকারীর স্পষ্ট দাবি, এই ধরনের একটি প্রশ্নপত্র তৈরি হওয়া রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার চরম অবক্ষয়ের ইঙ্গিত। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ঘটনার জন্য জবাবদিহি করতে হবে এবং জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্মান করা মানে গোটা জাতির আত্মাকে আঘাত করা।” তিনি আরও বলেন যে, যারা এই প্রশ্নপত্র তৈরি করেছে এবং এর অনুমোদন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এই ঘটনা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এবং জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কীভাবে এমন বিতর্কিত প্রশ্নপত্র তৈরি ও অনুমোদিত হতে পারে। শুভেন্দু অধিকারীর এই বিস্ফোরক মন্তব্য বিতর্কের আগুনে আরও ইন্ধন জোগাল এবং ঘটনাটি যে সহজে থামছে না, তার ইঙ্গিতও মিলল। সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, এখন সেটাই দেখার।