করোনার পর বন্ধ হয়ে যাওয়া শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি পুনরায় চালু হলেও তার নতুন রূপ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিত্যযাত্রীরা। রেল কর্তৃপক্ষ ট্রেনটিকে ‘আলিপুরদুয়ার-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস’ হিসেবে চালাচ্ছে, কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, এটি নামেই এক্সপ্রেস, আসলে চলছে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের মতোই।
যাত্রীদের মূল অভিযোগ হলো, এই ট্রেনটি এক্সপ্রেসের ভাড়া নিলেও সব ছোট-বড় স্টেশনে দাঁড়াচ্ছে এবং ধীর গতিতে চলছে। করোনার আগে এই রুটে চলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি বন্ধ হওয়ার পর ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চালু করা হয়। কিন্তু গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে প্যাসেঞ্জারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। এর ফলে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় লাগছে।
আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা সুবীর সরকার জানান, “আগে যে ট্রেনটি রাত ৯টায় আলিপুরদুয়ার পৌঁছাত, সেটি এখন রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সময় নিচ্ছে। রাতে ১টার পর বাড়ি পৌঁছানোটা খুবই সমস্যার। তাই এখন শিলিগুড়িতে থাকার জায়গা খুঁজছি।” মালবাজারের বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল, যিনি ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই রুটে যাতায়াত করছেন, বলেন, “ভয়ঙ্কর অব্যবস্থা চলছে। মান্থলি টিকিট কেটেও আমরা ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছি না।”
এই সমস্যা নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের যাত্রী পরিষেবা কমিটির সদস্য পার্থ রায় জানিয়েছেন যে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবেন। যদিও আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতমের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলকর্তা জানান, সেবক স্টেশন থেকে সিকিমমুখী একটি বড় রেল প্রকল্পের কাজ চলছে। সেই কারণে সেবক স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসটিকে গুলমা এবং বাগরাকোট স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস বা মালগাড়ির মতো ট্রেনগুলোকে পার করানো হয়। এর ফলে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসটি সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।
রেলের এই অব্যবস্থার কারণে বহু নিত্যযাত্রী এখন ট্রেন ছেড়ে দিয়ে বিকল্প যাতায়াতের কথা ভাবছেন, যা তাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে।