দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI) রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস (RCom) এবং এর প্রোমোটার-ডিরেক্টর অনিল আম্বানিকে ‘জালিয়াত’ (Fraud) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)-এর কাছে অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও সংসদকে জানানো হয়েছে। সোমবার লোকসভায় অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী লিখিত জবাবে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন।
পঙ্কজ চৌধুরী জানান, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) ‘মাস্টার ডিরেকশন অন ফ্রড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’ এবং ব্যাংক বোর্ডের নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনেই RCom ও এর প্রোমোটার-ডিরেক্টরকে ‘ফ্রড’ ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘোষণা করা হয়েছে ২০২৫ সালের ১৩ জুন। মন্ত্রী আরও জানান যে, ২৪ জুন এসবিআই এই বিষয়ে আরবিআইকে অবহিত করেছে এবং সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এরপর নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে বিষয়টি জানিয়েছে।
এসবিআই-এর কাছে রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের প্রায় ২২০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে। এর সঙ্গে ২০১৬ সাল থেকে সুদ যোগ হয়েছে। এছাড়াও, ৭৮৬.৫২ কোটি টাকার নন-ফান্ড বেসড ব্যাংক গ্যারান্টিও রয়েছে। উল্লেখ্য, অনিল আম্বানির এই টেলিকম সংস্থা বর্তমানে কর্পোরেট ইনসলভেন্সি রেজোলিউশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (NCLT)-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনিল আম্বানির বিরুদ্ধেও দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া চলছে এবং এই বিষয়েও NCLT-তে শুনানি চলছে।
পূর্বে একই পদক্ষেপ এবং আইনি জটিলতা:
এর আগেও ২০২০ সালের নভেম্বরে এসবিআই অনিল আম্বানির ওই সংস্থাটিকে ‘জালিয়াত’ ঘোষণা করেছিল। সেই সংক্রান্ত বিষয়ে ২০২১ সালে সিবিআই-এর কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট ওই বিষয়ে স্থিতাবস্থার নির্দেশ দেওয়ায় সেই অভিযোগ ফিরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় অনুযায়ী, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ব্যাংক আবারও রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস এবং অনিল আম্বানিকে ‘জালিয়াত’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
এসবিআই-এর এই পদক্ষেপ রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া এবং অনিল আম্বানির ব্যক্তিগত আর্থিক সংকটের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই ঘটনা কর্পোরেট গভর্নেন্স এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও কঠোর নজরদারির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরল।