ডিম মানেই প্রোটিনের ভাণ্ডার। সকালের জলখাবার হোক বা রাতের ডিনার—ডিম ছাড়া বাঙালির চলেই না। কিন্তু আদতে যা শরীরের পুষ্টির জোগান দিচ্ছে, তা অজান্তেই আপনার পেটে বিষ ছড়াচ্ছে না তো? পুরনো বা নষ্ট ডিম খেলে হতে পারে ভয়ঙ্কর ফুড পয়জনিং, ডায়েরিয়া এমনকি টাইফয়েড সৃষ্টিকারী সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।
বাজারে এখন ভেজাল এবং বাসি ডিমের রমরমা। তাই খাওয়ার আগে ডিম পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (FSSAI) এবং বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ডিম চেনার সহজ কিছু উপায়।
১. জলের জাদুকরী পরীক্ষা: একটি গ্লাসে জল নিয়ে ডিমটি ডুবিয়ে দিন।
-
তাজা ডিম: গ্লাসের একদম তলায় গিয়ে শুয়ে থাকবে।
-
২-৩ সপ্তাহের পুরনো: গ্লাসের নিচে থাকবে ঠিকই, কিন্তু সামান্য দাঁড়িয়ে বা ভেসে থাকবে। এটি এখনও খাওয়ার যোগ্য।
-
পচা ডিম: জলের ওপর ভেসে উঠবে। কারণ, ডিম যত পুরনো হয় খোসা দিয়ে বাতাস ঢুকে ভেতরে একটি বায়ু কোষ তৈরি করে, যা ডিমকে হালকা করে দেয়।
২. টর্চলাইট পরীক্ষা: অন্ধকার ঘরে ডিমের একপাশে উজ্জ্বল টর্চলাইট ধরুন। যদি ভেতরটা স্বচ্ছ দেখায়, তবে বুঝবেন ডিমটি তাজা। কিন্তু ভেতরে কালো দাগ বা ঘোলাটে ভাব মানেই সেটি নষ্ট হয়ে গেছে।
৩. ঝাঁকিয়ে দেখুন: ডিমটি কানের কাছে নিয়ে আলতো করে ঝাঁকান। যদি কোনো শব্দ না পান, তবে নিশ্চিত থাকুন ডিমটি তাজা। যদি ভেতরে ‘ছলাৎ ছলাৎ’ শব্দ হয়, তবে বুঝবেন কুসুম ও সাদা অংশ পাতলা হয়ে গেছে এবং ডিমটি বাসি।
৪. ভেঙে চিনে নিন: তাজা ডিম ভাঙলে কুসুম একদম মাঝখানে গোল হয়ে থাকবে এবং সাদা অংশ ঘন হবে। কিন্তু বাসি ডিমের সাদা অংশ জলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এবং কুসুম সহজেই ভেঙে যায়।
ফ্রিজের দরজায় ডিম? আজই সাবধান হোন! আমরা অনেকেই ফ্রিজের দরজার তাকে ডিম রাখি। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এটি মারাত্মক ভুল। সারাদিনে বারবার ফ্রিজ খোলায় দরজার অংশের তাপমাত্রার হেরফের ঘটে, যা ডিমকে দ্রুত নষ্ট করে দেয় এবং ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। ডিম সবসময় ফ্রিজের ভেতরে, যেখানে তাপমাত্রা স্থির থাকে সেখানে রাখা উচিত।
মনে রাখবেন: শীতকালে ডিম বাইরে রেখে ১ মাস এবং গরমে ১০ দিন পর্যন্ত খাওয়া যায়। তবে যেভাবেই পরীক্ষা করুন না কেন, ডিম ভাঙার পর যদি সালফার বা পচা গন্ধ বের হয়, তবে এক মুহূর্ত দেরি না করে তা ডাস্টবিনে ফেলে দিন।