বয়স অনুসারে রক্তে শর্করার মাত্রা কতো হওয়া উচিত জানেন কি? না জানলে জেনেনিন

রক্তে শর্করা মানুষের শরীরে শক্তির মূল জোগানদাতা। শর্করা ভেঙে গ্লুকোজ তৈরি হয়। এই গ্লুকোজ একাই স্নায়ুতন্ত্রের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। মানুষের প্রতিদিনের খাবারে মোট ক্যালরির ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ শর্করা থাকা উচিত। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হতে পারেন সুগারের রোগীরা।

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা অধিকাংশ সময় হানা দেয় রোগীর অজান্তেই। যখন ধরা পড়ে, তখন ক্ষতি হয়ে যায় অনেকটা। পাশাপাশি ডায়াবেটিস একা আসে না, ডেকে আনে আরো হাজার রকমের সমস্যা। দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস এই রোগ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যতো তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা যায়, ততো সুবিধা হয় চিকিৎসায়।

এতো দিন মনে করা হতো, ৪৫ বছর বয়স হয়ে গেলেই উপসর্গ থাক বা না থাক, প্রতি বছর অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু এখন আর ৪০ পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তিন দশক আগেও শিশু ও তরুণ-তরুণীদের দেহে এই রোগ ছিল অত্যন্ত বিরল। কিন্তু গত তিন দশকে এই ছবি বদলে গিয়েছে। তাই ছোট থেকেই রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

কোন বয়সে রক্তে শর্করার মাত্রা কতো হওয়া স্বাভাবিক?

>>> ৬ বছরের নীচে শিশুদের ফাস্টিং সুগার হওয়া উচিত ৮০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম/ডিএল-এর মধ্যে।

>>> ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ফাস্টিং সুগার হওয়া উচিত ৮০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রাম/ডিএল-এর মধ্যে।

>>> ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের ফাস্টিং সুগার হওয়া উচিত ৭০ থেকে ১৫০ মিলিগ্রাম/ডিএল-এর মধ্যে।

>>> ২০ বছরের উপরে যাঁদের বয়স, তাদের ফাস্টিং সুগার ১০০ মিলিগ্রাম/ডিএল-এর নীচে থাকাই শ্রেয়।

ঘন ঘন প্রস্রাবের অভ্যাস তৈরি হচ্ছে কী? তা হলে সাবধান হোন। রক্তে শর্করা বাড়লে তা কিডনিতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, শরীর থেকে অতিরিক্ত শর্করা বার করে দেওয়ার জন্যই এই চাপ। তাই ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। এমন হলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করান। হাত-পা কিংবা হাত-পায়ের কোনো আঙুল কী অবশ হয়ে পড়ছে? এমন হলে দ্রুত সতর্ক হতে হবে রক্তে শর্করা বাড়ার এটি অন্যতম লক্ষণ।

রক্তে শর্করা বাড়লে তা বের করার জন্য কিডনিতে চাপ দেয় বলে যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব হয়, তেমনই অতিরিক্ত প্রস্রাবের কারণে শরীরের জল বেরিয়ে যায়। তাই জলের পিপাসা পায় প্রবল। এমনকি, রাতে ঘুমের মধ্যেও জিভ শুকিয়ে জলের পিপাসা পায় বার বার। শরীরে কোনো ঘা অনেক দিন ধরে না শুকোলে সতর্ক হোন। কয়দিন ধরে কী হঠাৎই চোখে কম দেখছেন?

চশমা বদলানো বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াও একবার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করান। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তার প্রভাব পড়ে দৃষ্টিশক্তির উপরও। সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন? হাঁপিয়ে যাচ্ছেন প্রায়ই? খুব অল্পেই হাঁপিয়ে ওঠা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষণ। এর ফলে ডিহাইড্রেশনের শিকার হয় শরীর। ফলে দুর্বলতা বাড়ে।bs

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy