সকালের নাস্তায় ওটস অনেকেরই পছন্দের খাবার। যদিও এটি খেতে খুব বেশি সুস্বাদু মনে না-ও হতে পারে, তবে এর উপকারিতা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। ফিটনেস সচেতনদের খাবারের তালিকার উপরের দিকেই থাকে ওটস। কিন্তু প্রতিদিন ওটস খাওয়া কি সত্যিই শরীরের জন্য উপকারী? আপনার মনে যদি এই প্রশ্ন জাগে, তবে জেনে নিন প্রতিদিন ওটস খেলে আপনার শরীরে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।
১. হজমশক্তি উন্নত করে:
আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় ওটস রাখলে তা পেটের নানা সমস্যা সারাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। অক্সফোর্ড একাডেমিকে প্রকাশিত ২০২০ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, ওটস দ্রবণীয় ফাইবারে ভরপুর, যা পরিপাকতন্ত্রকে আলতো করে পরিষ্কার করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, পেট ফাঁপা দূর করে এবং অন্ত্রকে সুস্থ ও স্থির করে তোলে। এর কারণ হলো ওটস পানি শোষণ করতে পারে এবং জেলের মতো গঠন তৈরি করে, যা সহজেই মল সরাতে সাহায্য করে।
২. দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে:
সকালের নাস্তায় ওটস খেলে তা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। কারণ এটি হজম হতে বেশি সময় নেয়। ২০২১ সালে ‘ফুডস’-এ প্রকাশিত একটি পর্যালোচনা অনুসারে, ওটসে থাকা স্লো-রিলিজ কার্বোহাইড্রেট হঠাৎ ক্ষুধা নিবারণ করতে সাহায্য করতে পারে। ওটসের সঙ্গে ফল, বাদাম বা বীজ মিশিয়ে খেলে এটি আপনাকে স্বাভাবিকভাবে ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।
৩. পেটের চর্বি কমায়:
পেটের চর্বি কমানো সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর মধ্যে একটি। তবে নিয়মিত ওটস খেলে এই কঠিন কাজ কিছুটা সহজ হতে পারে। ওটসে ক্যালোরি কম, ফাইবার বেশি এবং এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে। ওটসে থাকা বিটা-গ্লুকান পেট ভরা অনুভূতিতে সাহায্য করতে পারে, যা অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল থাকলে ওটস কোমরের চারপাশে চর্বি জমাও কমাতে পারে।
৪. ত্বক ভালো রাখে:
সকালে এক বাটি ওটস হাইড্রেটিং, প্রদাহ-বিরোধী এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত হতে পারে, যা ত্বকের জন্য আশ্চর্যজনক উপকারিতা নিয়ে আসে। প্রতিদিন ওটস খেলে তা ত্বকের লালচেভাব, শুষ্কতা ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করতে পারে। নিয়মিত ওটস খেলে তা প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করে, কারণ এটি শরীরের ভেতর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (টক্সিন) সরিয়ে দেয়।
৫. শক্তির স্তর ভারসাম্যপূর্ণ রাখে:
ওটসে থাকা ফাইবার উপাদান খাবারের পরে অলসতা দূর করতে সাহায্য করে। সাদা রুটি বা প্রক্রিয়াজাত শস্যের মতো দ্রুত সুগারের মাত্রা বাড়ানোর পরিবর্তে, ওটস ধীরে ধীরে এনার্জি রিলিজ করে। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায়, বিরক্তি কম হয় এবং সারা দিন মনোযোগ ভালো হয়।
সুতরাং, আপনার সুস্থ জীবনযাত্রার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ওটস যোগ করে দেখুন। এর অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ ও সতেজ থাকতে সাহায্য করবে।