পেটের সমস্যা আজকাল বাঙালির ঘরে ঘরে। আর তেমনই একটি পরিচিত অস্বস্তি হল টক ঢেঁকুর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ বা ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স’ বলা হয়। এই সমস্যায় ঢেঁকুরের সঙ্গে টক বা তেতো স্বাদ অনুভূত হয়। মূলত পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে উঠে আসার কারণেই এমনটা ঘটে। এই অ্যাসিডের কারণে মুখ ও গলায় জ্বালাভাব এবং অস্বস্তি হতে পারে। অনেক সময় টক ঢেঁকুরের পাশাপাশি বুক জ্বালাও অনুভব হয়। এই ধরনের সমস্যায় পড়লে অনেকেই তড়িঘড়ি অ্যান্টাসিড খেয়ে ফেলেন। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এভাবে ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। বরং এই সমস্যার সমাধানে আপনি ভরসা রাখতে পারেন কিছু সহজ ঘরোয়া টোটকার উপর।
১. আদা:
আদা হজমক্ষমতা বাড়াতে এবং পেটের অ্যাসিড কমাতে দারুণ সাহায্য করে। টক ঢেঁকুরের সমস্যা কমাতে ছোট এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা আদা চা পান করতে পারেন। আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য খাদ্যনালীর প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।
২. তুলসী পাতা:
তুলসী পাতায় এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা পাকস্থলীর অ্যাসিডকে শান্ত করতে সাহায্য করে। কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে অথবা তুলসী পাতার রস পান করলে টক ঢেঁকুর থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। তুলসী পাতার শীতলীকরণ ক্ষমতা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে হওয়া জ্বালাভাব কমাতে সহায়ক।
৩. জিরা:
জিরা একটি পরিচিত হজমকারক এবং এটি পেটের অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। ভাতের সঙ্গে সামান্য জিরা ভেজে খেলে অথবা জিরা গুঁড়ো জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে তা টক ঢেঁকুরের সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। জিরা পাচক রস নিঃসরণে সাহায্য করে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সম্ভাবনা কমায়।
টক ঢেঁকুরের সমস্যা কমাতে এই ঘরোয়া টোটকাগুলি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তীব্র আকার ধারণ করে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘরোয়া পদ্ধতিগুলি প্রাথমিক উপশম দিতে পারলেও, অন্তর্নিহিত কারণ খুঁজে বের করা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অপরিহার্য।