কলা, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর কিনা যাচাই করুন এই তথ্য থেকে

কলা শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। কাঁচাকলা ও পাকাকলা— দুটোই শরীরের জন্য উপকারী। অনেকেই মনে করেন, কলাতে বেশি ক্যালোরি থাকায় এটি ডায়েটের জন্য ভালো নয়, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তবে কলার রঙের পরিবর্তনের সঙ্গে এর পুষ্টিগুণেও পরিবর্তন আসে। তাই শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক কলা বেছে নেওয়াই ভালো।

কাঁচাকলা থেকে পাকাকলা: পুষ্টিগুণের পরিবর্তন
১. কাঁচা কলা সবুজ থাকে, পাকার সঙ্গে সঙ্গে এটি হলুদ হয়ে যায় এবং পুষ্টিগুণেও পরিবর্তন আসে। কলার রং দেখেই বোঝা যায় এতে কী ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

সবুজ কলায় রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ বেশি পরিমাণে থাকে এবং শর্করা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এটি অ্যামিনো অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ভালো উৎস।

কলা যত পাকে, তত বেশি রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ শর্করায় রূপান্তরিত হয়। ফলে হলুদ কলায় শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে এবং এতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে।

যদি কলায় খয়েরি দাগ দেখা যায়, তবে সেটি আরও বেশি পাকা এবং এতে শর্করার পরিমাণ আরও বেশি। দাগ যত ঘন, শর্করার মাত্রাও তত বেশি।

অতিরিক্ত পাকা কলা সম্পূর্ণ খয়েরি রঙের হয়ে যায়। এতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে শর্করা ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে।

বিভিন্ন রোগে কলার উপকারিতা
ডায়াবেটিস রোগীরা নির্দিষ্ট পরিমাণে কলা খেতে পারেন, তবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। সাধারণত ১০০-১৫০ গ্রাম ফল খেলে তার অর্ধেক অর্থাৎ ৫০-৭৫ গ্রাম কলা খাওয়া যেতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে পাকা কলা খাওয়া ভালো, কারণ এতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা হজমে সাহায্য করে।

পেট খারাপ হলে কাঁচাকলা খাওয়া উপকারী, কারণ এটি অন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

পটাশিয়ামের ভালো উৎস হওয়ায়, যাদের শরীরে পটাশিয়ামের অভাব রয়েছে বা হাইপোক্যালেমিয়া রোগে ভুগছেন, তাদের নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত। তবে রেনাল ফেলিয়োর বা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়, তাই তাদের জন্য কলা এড়িয়ে চলাই ভালো।

ওজন বাড়ানোর প্রয়োজন হলে কলা অত্যন্ত কার্যকর, কারণ এতে অন্যান্য ফলের তুলনায় বেশি ক্যালোরি থাকে।

ওবেসিটি বা হৃদরোগের সমস্যা থাকলে, অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলতে হয়, তবে বিকল্প হিসেবে পরিমিত পরিমাণে কলা খাওয়া যেতে পারে।

কলা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ভারী খাবারের সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভালো। খাবার খাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে কলা খেলে শরীর সহজে এর ফাইবার শোষণ করতে পারে।

কেউ কেউ সরাসরি কলা খেতে পছন্দ করেন না, তাদের জন্য কলার স্মুদি, ফলের স্মুদি বা ওটসের স্মুদি একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

সঠিক উপায়ে ও পরিমাণ বুঝে কলা খেলে এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী হয়ে উঠতে পারে। তাই নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা বা পাকা কলা বেছে নিন এবং সুস্থ থাকুন! 🍌

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy