সন্তানের প্রথম পাঠশালা তার পরিবার। এখানেই তার শিক্ষার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সঠিক মূল্যবোধ ও আচরণ শেখানো জরুরি। প্রত্যেক বাবা-মাই চান তাদের সন্তান ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। তবে কিছু নির্দিষ্ট আচরণ দেখলে অভিভাবকদের এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় ভবিষ্যতে এর ফল খারাপ হতে পারে।
শ্রদ্ধা না করা:
যদি আপনার চোখের আড়ালে সন্তান বড়দের প্রতি কটু কথা বলে বা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তবে এখনই সতর্ক হোন। সকলের সামনে তাকে মারধর না করে, আলাদা ডেকে নিয়ে গিয়ে বুঝিয়ে বলুন। জনসমক্ষে গায়ে হাত তুললে হিতে বিপরীত হতে পারে। শিশুদের মধ্যে বড়দের প্রতি সম্মান দেখানোর গুরুত্ব ছোটবেলা থেকেই তৈরি করা উচিত।
বাড়ির গৃহকর্মীকে নিচু করে কথা বলা:
আমাদের অনেকের বাড়িতেই সহায়তার জন্য গৃহকর্মী থাকেন। তারা পূর্ণ সময়ের হোন বা খণ্ডকালীন, তাদেরও যে আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ এবং তাদের প্রতি সম্মান জানানো উচিত – এই বোধ ছোটবেলা থেকেই সন্তানের মধ্যে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন। তাদের সঙ্গে নিচু স্বরে বা খারাপ ব্যবহার করতে দেখলে সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন এবং এমন আচরণ করতে নিষেধ করুন।
জিনিসের মূল্য না বোঝা:
অনেক বাবা-মাই সন্তানের কোনো আবদার অপূর্ণ রাখতে চান না। তবে সন্তানের বায়না করা মাত্রই জিনিস কিনে দেওয়ার অভ্যাস থাকলে আপনার সন্তান জিনিসের গুরুত্ব বুঝবে না। তারা সবকিছু সহজলভ্য মনে করবে এবং জিনিসের প্রতি তাদের কোনো Wertgefühl থাকবে না। সন্তানের মধ্যে জিনিসের মূল্যবোধ তৈরি করা জরুরি, তাই সব আবদার পূরণ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
মিথ্যা বলা:
আপনার সন্তান যদি কথায় কথায় মিথ্যা বলে, তবে এখন থেকেই তাকে সাবধান করুন। খেলার সময় বন্ধুদের নামে মিথ্যা দোষ দেওয়া থেকে এই অভ্যাসের শুরু হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে এই অভ্যাস একটি স্থায়ী রূপ নিতে পারে এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মিথ্যা বলার খারাপ দিকগুলি ছোটবেলা থেকেই তাদের বোঝানো উচিত।
সন্তানের সঠিক বিকাশের জন্য শুধু ভালো খাবার আর পড়াশোনা যথেষ্ট নয়। তাদের মধ্যে সঠিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক আচরণ তৈরি করাও অভিভাবকদের গুরুদায়িত্ব। তাই উপরে উল্লেখ করা আচরণগুলি দেখলে তা সংশোধন করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নিন। আপনার সামান্য সচেতনতাই আপনার সন্তানকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।