শীতকালে শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে খাওয়াতে পারেন এইসব খাবার, মায়েরা জীনেনিন

শীতে এমনিতেই শিশুকে নিয়ে শঙ্কায় থাকেন অভিভাবকরা। শিশুর খাবার নিয়েও কাজ করে নানা দ্বিধা। শীতে শিশুর খাবার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের সাবেক প্রধান ও পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো। লিখেছেন আতিফ আতাউর
শীতে শিশুর খাবার
পরিবেশবদলের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের অসুখবিসুখ হওয়া খুব স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

কারণ এর মধ্য দিয়েই শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়। অসুখের সঙ্গে লড়ে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়া শিখে যায় তারা।

শীতকালে শিশুদের সর্দি, জ্বর, কাশি ও গলা ব্যথা থেকে দূরে রাখতে দরকার বাড়তি যত্ন। শীতে শিশুদের বেশি শক্তি দরকার হয়। বাড়তি শক্তি শিশুর শরীরকে ঠাণ্ডার সঙ্গে লড়াইয়ের রসদ জোগায়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ সময় শিশুর শারীরিক যত্নের পাশাপাশি খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে মা-বাবার।

কলার কথকতা

শিশুদের কলা খুবই প্রিয় একটি খাবার। অনেকের মধ্যে একটি ধারণা আছে, কলা একটি ঠাণ্ডা খাবার। এটি শিশুদের শীতের সময় খেতে দেওয়া যাবে না। ধারণাটির আসলে কোনো ভিত্তি নেই। কোনো গবেষণায়ও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে শীতে কলা খেতে মানা। তবে শিশুর ঠাণ্ডার প্রকোপ বেশি হলে মায়েদের মনের শঙ্কা দূর করতে শিশুকে কলা খেতে না দেওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়। শিশু সুস্থ হলে তাকে কলা খাওয়াতে কোনো বাধাই নেই।

ঠাণ্ডা খাবার পরিহার করা ভালো

শীতে শিশুকে ঠাণ্ডা খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। ঠাণ্ডা খাবার শিশুদের গলা থেকে নাক পর্যন্ত শ্বাসনালিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ জন্য শিশুকে এ সময় কুসুম গরম খাবার খাওয়াতে হবে। শিশুর খাবার খোলা রাখা যাবে না। সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। শিশুর খাবার একবার রান্না করে বারবার খাওয়ানো যাবে না। প্রতিবার খাওয়ানোর আগে রান্না করতে হবে।

kalerkantho

জলও হোক কুসুম গরম

শিশুকে শীতের দিনে ঠাণ্ডা জল খাওয়ানো যাবে না। এতে তার ঠাণ্ডা লাগাসহ নানা রকম অসুখ হতে পারে। শিশুদের জন্য ঠাণ্ডা জল পান করা শীতের দিনে কষ্টকরও। এ জন্য শিশুকে কুসুম গরম জল পান করতে দিতে হবে।

কুসুম গরম জলের মধ্যে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে দিতে পারেন। লেবুর রস শিশুর জন্য খুব ভালো। এতে শিশু ভিটামিন ‘সি’র জোগান পাবে। কুসুম গরম লেবু জল শিশুর গলা পরিষ্কার রাখাসহ একটি হোম রিমেডি হিসেবেও কাজ করে। ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশিতেও কুসুম গরম লেবু-জল বেশ উপকারী।

বেশি বেশি শীতের সবজি

শীতকালে শিশুর হাঁপানি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। এ সময় ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার উপকার দেবে। লেবুর রস, কমলালেবু, পালংশাক, আলু, ব্রকোলি, কিউই, বেরি, বিট, কড়াইশুঁটি, মুলা, গাজর, বিনস, মসুর ডাল জাতীয় খাবারগুলো এ সময়ে শিশুর জন্য বেশি ভালো। শীতের সবজি শিশুদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এসব সবজিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শিশুকে ঠাণ্ডা ও ফ্লু থেকে রক্ষা করবে। শিশুর শরীরে তাপ উত্পন্ন করে শীত মোকাবেলায় সাহায্য করবে।

প্রতিদিন কিছু বাদাম

শীতের দিনে শিশুকে যেকোনো ধরনের বাদাম খাওয়াতে পারেন। বাদামে ফেনোলিক যৌগ, হাইকোয়ালিটি প্রোটিন এবং ফাইবার পাওয়া যায়। এসব উপাদান শিশুর প্রদাহ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগ থেকে সুরক্ষা দেবে।

বেশি বেশি আঁশজাতীয় খাবার খাওয়ান

ঠাণ্ডার দিনে শিশুকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচাতে বেশি বেশি আঁশজাতীয় খাবার খেতে দিন। আঁশজাতীয় খাবার শিশুর জন্য খুব উপকারী। এসব খাবার শিশুর শরীরে ক্যালরির ভারসাম্য রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ঠাণ্ডা ও ফ্লু থেকে রক্ষা করে। বেদানা, নাশপাতি, মিষ্টি আলু, পেঁয়াজ, মাল্টা, আমড়া ও জাম্বুরা খাওয়াতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy