একটি সুস্থ মন একটি সুস্থ শরীর সামগ্রিক সুস্থতার লক্ষন। এই সামগ্রিক সুস্থতার বোধের সঙ্গে নিজেকে সুখী রাখতে একটি সুস্থ শরীর বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে আয়রনের ঘাটতি একটি সাধারণ ঘটনা এবং একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি অনিবার্য হয়ে ওঠে। তবে, আয়রনের ঘাটতি বলতে শরীরে সুস্থ লাল রক্ত কণিকার অভাবকেই বোঝায়, যার কারণে হিমোগ্লোবিন কমে যায়। আর এর ফলে হয়ে থাকে নানান শারীরিক সমস্যা। তাই ওষুধ ছাড়াও শরীরের এই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন সাধারণ এই ৬ খাবার। যা সহজেই ওষুধ ছাড়াই পূরণ করবে শরীরে আয়রনের ঘাটতি।
সাধারণত, বিশেষ করে মেয়েদের যেই সময় থেকে পিরিয়ড শুরু হয়, গর্ভাবস্থায় বা যখন তারা মেনোপজের কাছাকাছি থাকে। সেই সময় শরীরে আয়রন ডেফিসিয়েনসি বেশি পরিমানে হয়ে থাকে। আয়রনের ঘাটতির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলি হল দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, লেট বা হেভি পিরিয়ড, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, ঠান্ডা হাত-পা এবং ফ্যাকাশে ভাব। যদিও এখন বাজারে প্রচুর এর পরিপূরক পাওয়া যায়। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে, খাদ্য তালিকায় এগুলি রাখলে অনায়াসেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে। জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলি কি কি-
১) বিনসের দানা- এই দানা আয়রন সমৃদ্ধ এবং ছোট অংশ আপনাকে শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রনের ২৬-২৯ শতাংশ চাহিদা প্রদান করতে পারে। তাই এটিকে নিয়মিত আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করলে আপনার আয়রনের ঘাটতিজনিত সমস্যাগুলো সহজেই এবং সম্পূর্ণভাবে সমাধান করা যায়।
২) আমিষ- লিভার, কিডনি, মস্তিস্ক ও হার্টসহ সব অঙ্গের আমিষই আয়রনের সমৃদ্ধ উৎস। লিভার লোহার একটি বিশেষভাবে সমৃদ্ধ উৎস এবং পাঁঠার মাংসের যকৃতের সামান্য পরিবেশন দিনে ৩৬ শতাংশ আয়রন সরবরাহ করতে পারে।
৩) গুড়- গুড় শরীরের জন্য উদ্ভিদ ভিত্তিক চিনির একটি চমৎকার উৎস। আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় গুড়ের একটি ছোট অংশ অন্তর্ভুক্ত করা আয়রনের ঘাটতিতে অনেক সাহায্য করতে পারে। যদিও গুড় প্রতিদিনের আয়রনের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট, তবে নিয়মিত সাদা চিনিকে গুড় দিয়ে প্রতিস্থাপন করা আপনার খাদ্যে আরও আয়রন যোগ করতে সাহায্য করতে পারে এবং এটি একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্পও।
৪) আমলকি- আমলকি বা ভারতীয় গুজবেরি একটি সুপার ফুড কারণ এটি ভিটামিন সি, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের মতো পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় আমলকি অ্যানিমিয়া নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে। এটি আচার, মিছরি বা মুরাব্বা সহ অনেক আকারে খাওয়া যেতে পারে। আমলকি সিদ্ধ করে খাওয়া যায়। প্রতিদিন একটি করে আমলকি খেলে তা রক্ত ও শরীরের জন্য দারুণ কিছু করতে পারে।
৫) ভেজানো কিশমিশ- বেশিরভাগ শুকনো ফলই আয়রনের ভালো উৎস এবং কিশমিশ বিশেষ করে কপার এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ যা রক্তের কোষ তৈরির জন্য ভালো। রাতভর জলে আট থেকে দশটি কিসমিস ভিজিয়ে রেখে পরের দিন খেলে তা রক্তের পরিমান বাড়িয়ে তোলে।
৬) পালং শাক- পালং শাক আসলে পেশী এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে এবং এটিকে সপ্তাহে দুবার খেলে আয়রনের একটি ভাল উৎস হতে পারে।