পিরিয়ডের সময় অস্বস্তি কমাতে কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত? মেয়েরা জেনেনিন

পিরিয়ড প্রতিটি নারীর জীবনে একটি স্বাভাবিক এবং গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। তবে এই সময় পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, মেজাজের পরিবর্তন সহ নানান শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি দেখা দেয়। গর্ভধারণের জন্য নারীর পিরিয়ড হওয়া অপরিহার্য হলেও, মাসের এই কয়েকদিন অনেক মহিলার জন্যই বেশ কষ্টকর। এই সময়ে শরীরে হরমোনের নানা পরিবর্তন ঘটে, যা খাদ্য গ্রহণ এবং হজম প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে। যদিও এই সময় শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন, কিছু খাবার গ্রহণ করলে ব্যথা এবং অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত, তা জেনে নেওয়া যাক:

চিনিযুক্ত খাবার: পিরিয়ডের সময় মিষ্টি খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত। উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার রক্তে শর্করার মাত্রায় দ্রুত পরিবর্তন ঘটায়, যা মেজাজের ওঠানামা, ক্লান্তি এবং মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে তোলে। ক্যান্ডি, চিনিযুক্ত পানীয়, পেস্ট্রি এবং অন্যান্য মিষ্টি খাবার এই সময় ত্যাগ করাই শ্রেয়।

লবণাক্ত খাবার: লবণাক্ত খাবার শরীরে জল ধরে রাখার প্রবণতা বাড়ায়, ফলে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে এবং পিরিয়ডের অস্বস্তি আরও বাড়ে। চিপস, লবণাক্ত বাদাম এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এই সময় না খাওয়াই ভালো।

চর্বিযুক্ত খাবার: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে পেট ফাঁপা এবং হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভাজাভুজি খাবার, মাংসের মেদ, সস এবং ফাস্ট ফুড পিরিয়ডের সময় এড়িয়ে চলা উচিত।

ক্যাফেইন: কফি, চা এবং এনার্জি ড্রিংকসের মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পিরিয়ডের সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং ব্যথা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই সময় ক্যাফেইন গ্রহণ সীমিত করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

দুগ্ধজাত পণ্য: কিছু মহিলার পিরিয়ডের সময় ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা বা দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা যায়। এর ফলে পেটে ব্যথা এবং ফোলাভাবের মতো সমস্যা হতে পারে। দুধ, পনির, দই এবং আইসক্রিমের মতো খাবার এই সময় এড়িয়ে গেলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।

মশলাদার খাবার: মশলাদার খাবার হজম প্রক্রিয়ায় অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ডায়রিয়া বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা মশলাদার তরকারি বা তেল-মশলাযুক্ত খাবার পছন্দ করেন, তাদের পিরিয়ডের সময় এটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা উচিত।

অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পানের ফলে মেজাজ খারাপ হতে পারে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়তে পারে। এর কারণে ব্যথা এবং ক্লান্তি আরও বাড়তে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় অ্যালকোহল পরিহার করাই উচিত।

পিরিয়ডের সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা অস্বস্তি কমাতে সহায়ক হতে পারে। এই সময় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা এবং উপরোক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলা নারীদের জন্য আরামদায়ক হতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy