চুলের আগা ফাটার সমস্যায় কমবেশি অনেকেই ভোগেন। চুলের আগা না কাটলে এই সমস্যা ক্রমশ বাড়তেই থাকে, কারণ একবার চুল ফাটা শুরু হলে তা সহজে থামে না। মূলত চুলের পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবের কারণেই এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে চুলের আগা ফাটা রোধ করা সম্ভব। জেনে নিন সেই কার্যকরী উপায়গুলো:
১. মধুর জাদু:
মধু শুধু ত্বকের জন্যই ভালো নয়, চুলের জন্যও এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান দারুণ কার্যকর। স্নানের ঠিক আগে পুরো চুল ভিজিয়ে নিন এবং চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে মধু মেখে নিন। ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের আগা ফাটা কমবে।
২. জবা ফুলের তেল:
চুলের আগা ফাটা, খুশকি এবং চুল পড়ার মতো সমস্যার সমাধানে জবা ফুল এক অসাধারণ উপাদান। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলে দুটি জবা ফুল গরম করে নিন। এরপর তেল ছেঁকে ঠান্ডা করে একটি বোতলে ভরে রাখুন। প্রতিবার ব্যবহারের আগে সামান্য গরম করে চুলের আগা এবং গোড়ায় ভালোভাবে তেল মালিশ করুন। ২০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহারে চুলের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৩. ডিম ও দুধের হেয়ার মাস্ক:
ডিম ও দুধের তৈরি হেয়ার মাস্ক চুলের আগা ফাটা রোধে অত্যন্ত কার্যকর। একটি ডিমের কুসুম, দুই টেবিল চামচ দুধ এবং এক চা চামচ চিনি বা মধু একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি চুলের আগা থেকে শুরু করে গোড়া পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার ব্যবহারেই ভালো ফল পাওয়া যায়।
৪. কলার পুষ্টি:
কলায় রয়েছে পটাশিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন এবং ভিটামিন সি, এ ও ই, যা চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখতে এবং আগা ফাটা রোধ করতে সহায়ক। একটি পাকা কলা ভালোভাবে চটকে নিয়ে তার সাথে দুই চামচ টক দই, এক চামচ গোলাপজল ও আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা পর ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে চুলের আগা ফাটা কমে যাবে।
৫. ডিম ও তেলের মিশ্রণ:
চুলের পুষ্টির জন্য প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া জরুরি। পাশাপাশি, একটি ডিমের সাথে তিন চামচ আমন্ড অয়েল অথবা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলের আগা ফাটা রোধে সাহায্য করে। এর সাথে এক চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি হেয়ার মাস্কের মতো মাথায় লাগান এবং এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
উপরের এই উপায়গুলো অবলম্বন করে কিছুদিনের মধ্যেই চুলের আগা ফাটার সমস্যা রোধ করা সম্ভব। যেকোনো হেয়ার মাস্ক সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন। নিয়মিত চুলে তেল মালিশ করুন এবং চুল পরিষ্কার রাখুন। রাতে ঘুমানোর আগে চুল খুলে না রেখে উঁচু করে খোঁপা করে ঘুমানো উচিত, কারণ চুল খোলা থাকলে বা বেণী করে রাখলেও ঘুমের সময় ঘষা লেগে আগা ফেটে যেতে পারে।